নয়া দিল্লি: ৩ মে মণিপুরে হিংসা শুরু হওয়ার একদিনের মধ্যেই ৩৬,০০০ কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়েছিল সরকার। সেই সঙ্গে ১৬টি ভিডিয়ো কনফারেন্স করেছিল, বায়ুসেনার বিমান পাঠিয়েছিল এবং এর পাশাপাশি মণিপুরের মুখ্য সচিব, ডিজিপি এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা বদলে দিয়েছিল ভারত সরকার। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই তিন পদে নতুন লোক নিয়োগ করা হয়েছিল। ৪ মের মধ্যেই মণিপুরের হিংসা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল সরকার। কাজেই মণিপুরে শান্তি ফেরাতে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি সরকার, বা কেন্দ্রীয় সরকার ঘুমিয়ে ছিল বলে যে দাবি বিরোধীরা করছে, তা সর্বৈব ভুল। বুধবার (৯ অগস্ট), অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে এই তথ্য জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন করেছে, কেন মণিপুরে ৩৫৬ ধারা জারি করা হচ্ছে না? কেনই বা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-কে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না? অমিত শাহ জানিয়েছেন, হিংসার সময় রাজ্য সরকার যদি কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা না করে, সেই ক্ষেত্রেই ৩৫৬ ধারা জারি করা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীও বদলানো হয়, যখন কোনও রাজ্যের সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে সহয়োগিতা না করে তখনই। কিন্তু মণিপুরের সরকার প্রথম থেকে কেন্দ্রের সঙ্গে সবযোগিতা করে চলেছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীও বদলানো হয়নি, আর ৩৫৬ ধারাও জারি করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, হিংসার মধ্যেই ২৮ দিনের মধ্যে রেল যোগাযোগে মণিপুরে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করেছেন তাঁরা। আর তাই জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আছে। তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে মেইতেই অঞ্চলে কুকি চালক বা কুকি এলাকায় মেইতেই চালকল প্রবেশ করতে পারছিল না। অসম থেকে ট্রাক-ড্রাইভার নিয়ে আসা হয়েছিল। সেনাকেও সরবরাহ চালু রাখআর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
হিংসার হিসেব দিয়ে অমিত শাহ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ১৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মে মাসে মৃত্যু হয়েছিল ১০৭ জনের, জুনে ৩০, জুলাইয়ে ১৫ এবং অগস্ট মাসে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মে মাসে যে ১০৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল, তার মধ্যে ৬৮ জন হিংসার প্রথম তিনদিনেই প্রাণ হারিয়েছিলেন। অমিত শাহ দাবি করেন, হিংসা ধীরে ধীরে কমছে। এই হিংসার আগুনে আর তেল না ঢালার জন্য তিনি বিরোধীদের অনুরোধ করেন।