নতুন দিল্লি: রবিবারই, ভারত ও চিনের মধ্যে ষোড়শ উচ্চ-স্তরের সামরিক বৈঠক শুরু হয়েছে। একই দিনে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় চিনা যুদ্ধবিমানের কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে ‘যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার’ কড়া বার্তা দিলেন ভারতীয় বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভিআর চৌধুরী। গত জুনের মাসের শেষ সপ্তাহে, একটি চিনা যুদ্ধবিমান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে বিতর্কিত এলাকা দিয়ে উড়েছিল। তবে, শীঘ্রই যুদ্ধবিমানটি ধরা পড়ে গিয়েছিল এবং ভারতীয় যুদ্ধবিমান চিনা বিমানটিকে তাড়া করে সেখান তেকে সরিয়ে দিয়েছিল।
এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদনে আইএএফ প্রধানকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকার আকাশে কী কার্যকলাপ চলছে, তা আমরা ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করি। যখনই আমরা দেখি কোনও চিনা যুদ্ধবিমান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে, তখনই, আমরা আমাদের যোদ্ধাদের সতর্ক করে এবং আমাদের সিস্টেমগুলিকে উচ্চ সতর্কতায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিই। এতেই তারা আর এগোনোর সাহস পায় না।’ বায়ুসেনা প্রধান অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, চিনাদের এই কার্যকলাপের কোনও বিশেষ কারণ তাঁরা খুঁজ পননি। কেন বারবার, তারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন ভারতীয় আকাশসীমায় ঢুকে পড়ছে তা এখনও ভারতীয় পক্ষের কাছে অজানা।
এদিকে, এদিন সকালেই পূর্ব লাদাখের চুশুল-মলডো মিটিং পয়েন্টে ষোড়শ ভারত-চিন উচ্চ-স্তরের সামরিক বৈঠক শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ চুশুল-মলডো মিটিং পয়েন্টের ভারতীয় অংশে এই আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকা বরাবর যে যে অংশে এখনও ভারতীয় ও চিনা সেনার অবস্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে, সেই সব এলাকায় দ্বিপাক্ষিক সমাধানই এই বৈঠকের লক্ষ্য। ১৯৫৯ সালেই এই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ধার্য করা হয়েছিল এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে, সেই অবস্থা একপাক্ষিকভাবে না পরিবর্তন করার বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু, ২০২০ সালের ৫ মে চিনা পিএলএ সেই চুক্তি ও প্রোটোকল লঙ্ঘন করে ছিল। প্যাংগং তসোর উত্তর তীরে প্রচুর পরিমাণে চিনা পিএলএ সদস্য অনুপ্রবেশ করেছিল। সেই থেকে লাদাখ সেক্টরে দুই পক্ষের অচলাবস্থা চলছে।
এর আগে, গত ১১ মার্চ ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি বা চিনা পিএলএ-র মধ্যে শেষ দফার উচ্চস্তরের সামরিক বৈঠক হয়েছিল। পঞ্চদশ দফার সেই বৈঠক প্রায় ১৩ ঘন্টা ধরে চললেও, তা থেকে কোন উল্লেখযোগ্য সমাধান বের হয়নি। তবে, এক যৌথ বিবৃতিতে, দুই পক্ষই তাদের বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সমস্যাগুলির সমাধান করে লাদাখ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে বলে দাবি করেছিল। আলোচনার মধ্য দিয়েই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতিও সহজতর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিল। এদিনের বৈঠকে কতটা কাজ হয়, এখন সেটাই দেখার।