কলকাতা: আজ, দুপুরে নিউ টাউনের শ্যুটআউটে এসটিএফের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে পাঞ্জাবের কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল সিং ভুল্লারের। বাবা ছিলেন পাঞ্জাব পুলিশের আধিকারিক। জয়পাল ছিল জাতীয় স্তরের হ্যামার-থ্রোয়ার। ক্রমশ সেই জয়পাল হয়ে উঠেছিল পাঞ্জাবের অপরাধ জগতের রাজা। একের পর এক অপরাধ করে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ‘গায়েব’ হয়ে যেত জয়পাল। ২০১৬ থেকে তাকে খুঁজছে পুলিশ। তার মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা।
২০১৬ তে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাস্টার রকিকে খুন করে পালায় জয়পাল সিং ভুল্লার। ফেসবুক পোস্টে সে লেখে, ‘এই তো সবে খেলা শুরু।’ তারপর থেকে একের পর এক খেল দেখিয়েছে জয়পাল। ভয়াবহ ডাকাতি, দুঃসাহসিক খুনের ঘটনার পরও তাকে নাগালে পায়নি পুলিশ। এই কয়েক বছরে একের পর এক গ্যাংস্টার ধরা পড়লেও পুলিশকে অন্ধকারে রেখেছিল জয়পাল। মোট ৪৫ টি মামলা ছিল এই গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে।
রকিকে খুনই শেষ নয়, ২০১৭-তে চণ্ডীগড়ে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের ক্যাশ ভ্যান থেকে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা লুঠ করে জয়পাল ও তার দলবল। এই ঘটনায় জড়িত ছিল তার ভাই অমৃতপাল সিং ভুল্লারও। ২০২০-তে লুধিয়ানায় দিনের আলোয় ৩০ কেজি সোনা লুঠ করে পালায় ওই গ্যাং। এই ঘটনার পর পাঞ্জাবের ‘অর্গানাইজড ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট’ গ্রেফতার করে জয়পালের ভাই অমৃতপাল ও গ্যাং-এর আর এক দুষ্কৃতী গগণদীপকে। সে বারও অনায়াসে পালিয়ে যায় জয়পাল। পরে জয়পাল ঘনিষ্ঠ ভিকি গাউন্ডার ও প্রেমা লাহোরিয়ার মৃত্যু হয় এনকাউন্টারে।
জানা গিয়েছে, জয়পালের বাবা ছিলেন পাঞ্জাব পুলিশের এএসআই। জয়পাল নিজে ছিল জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট। ২০০৩-এ অপরাধ জগতের সঙ্গে তার যোগযোগ শুরু। একটি অপহরণের ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয়েছিল তাকে। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে অপরাধ জগতেই ফিরে যায় সে। তার সঙ্গী ছিল হ্যাপি নামে আরও এক দুষ্কৃতী। রাজা, শেরা, চনন্দু মিলে তৈরি করে গ্যাং, যারা হাইওয়েতে লুঠপাট চালাত। হাইওয়েতে থেকে গাড়ি চুরি হোক বা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা, অপরাধে তারা ছিল সিদ্ধহস্ত। ২০১৫-তে আরও এক গ্যাস্টার সুখা কাহলোঁকে খুন করে জয়পালের লোক।
সম্প্রতি পাঞ্জাবের জাগরাওঁতে দুই পুলিশকর্মী খুনের ঘটনায় ফের উঠে আসে জয়পালের নাম। গত ১৫ মে ভগবান সিং ও দলবিন্দরজিৎ সিং নামে দুই এএসআই-কে গুলি করে খুন করা হয়। আর তাতেই জড়িত ছিল জয়পাল। এরপর আরও জোর তল্লাশি শুরু হয় জয়পালের খোঁজে। জয়পাল ছাড়াও জসপ্রীত সিং নামে আরও এক দুষ্কৃতীর নাম উঠে আসে এই ঘটনায়। বুধবারের শ্যুটআউটে জসপ্রীতেরও মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শোনা যায়, নিজে মোবাইল ব্যবহার করত না জয়পাল, তাই সহজেই ধূলো দিতে পারত পুলিশের চোখে।