একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেয়ে জোট সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে। সুযোগ বুঝে এনডিএ-র শরিক দলরা বিভিন্ন মন্ত্রিত্বের দাবি জানিয়েছেন। মূলত নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি বিজেপি-র সঙ্গে দর কষাকষিতে এগিয়ে রয়েছেন। বিভিন্ন মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি লোকসভার স্পিকার পদটির জন্যও দাবি জানিয়েছে বিজেপি-র একাধিক শরিক দল। কিন্তু স্পিকার পদের প্রতি সবার নজর কেন? কেন তাঁরা এই পদ পেতে আগ্রহী? বিজেপি-ই বা কেন স্পিকার পদ নিজেদের লোককে দিতে মরিয়া?
বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-র সবথেকে বড় দুই শরিক হল টিডিপি এবং জেডিইউ। দুই দলই স্পিকার পদ পাওয়ার দাবি জানিয়েছে। জোট সরকার যখন গঠিত হয়, তখন বিভিন্ন ইস্যুতে স্পিকারকে যে সব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে হয়, তা অজানা হয় চন্দ্রবাবু নায়ডুর। কারণ তাঁর দল অতীতে একাধিক জোট সরকারে সামিল থেকেছে। তাই এর গুরুত্ব টিডিপি ভালোই বোঝে।
লোকসভার অধিবেশনের প্রথম দিনে স্পিকার নির্বাচন করা হয়। তার আগে প্রোটেম স্পিকার হিসাবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অধিবেশনে স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাঁরাই এই দায়িত্ব পালন করেন।
স্পিকারের কী ক্ষমতা?
লোকসভার স্পিকার হলেন লোকসভার প্রধান। তিনি সংসদের নিম্মকক্ষের মুখপাত্রও বটেন। সংসদ পরিচালনা, সংসদে সাংসদদের আচরণ বিধি দেখভাল এবং সংসদ পরিচালনার সমস্ত ভার স্পিকারের কাঁধে ন্যস্ত থাকে। স্পিকারকে সংবিধানের শেষরক্ষক হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। প্রশ্ন যখন জোট সরকারর পরিচালনার হয়, তখন স্পিকারের গুরুত্ব কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সংসদের অন্দরে অধিবেশন পরিচালনায় স্পিকার মুন্সিয়ানার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সেই সঙ্গে সংসদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত স্পিকার নিয়ে থাকেন। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট গত ১০ বছরের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই সংসদের অন্দরে বিল পাশ হোক বা অন্য যে কোনও বিষয়ে আলোচনা। অতীতের থেকে বেশি বাধা যে তৃতীয়বারের মোদী সরকারকে মোকাবিলা করতে হবে তা বলাই বাহুল্যে। এই পরিস্থিতিতেই স্পিকার পদ ছেড়ে দিতে আগ্রহী নয় বিজেপি। কিন্তু শরিকদের আবদার মেটাতে শেষ অবধি কী সিদ্ধান্ত হয়, সে দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।