বেঙ্গালুরু: রাত সাড়ে নটার সময় প্রেমিকের সঙ্গে বসে পার্কে বসে ধূমপান করছিলেন। সেই অবস্থায় ১৯ বছরের মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল চার দুষ্কৃতী। তারপর, রাতের অন্ধকারে একটি চলন্ত গাড়িতে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হল ভোটমুখী কর্নাটক। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। তাদের তৎপরতায় ইতিমধ্য়েই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম – সতীশ, বিজয়, শ্রীধর এবং কিরণ। চারজনই ইজিপুরা ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা, বয়স ২২ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, চারজনই বিভিন্ন প্রাইভেট ফার্মে কাজ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলাও একটি প্রাইভেট ফার্মে কাজ করেন। ঘটনাটি ঘটছে ২৫ মার্চ রাতে। রাত সাড়ে নটা নাগাদ কোরমঙ্গলের ন্যাশনাল গেমস ভিলেজের এক পার্কে বসে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে গল্প করছিলেন ওই মহিলা। তাঁরা ধুমপান করছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। সেই সময়ই আচমকা অভিযুক্ত চার যুবক সেখানে উপস্থিত হয়েছিল। ওই যুবক প্রশ্ন করে, তাঁরা সেখানে কী করছেন। তাকে জবাব না দিয়ে নিজের চড়কায় তেল দিতে বলেছিলেন যুগল। এই নিয়ে যুগলের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছিল অভিযুক্ত। এক সময় অভিযুক্ত ওই এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিল। কিছু পরে মহিলার প্রেমিকও বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। তাঁর বাড়ি ওই পার্কের কাছেই বলে জানা গিয়েছে।
মহিলার প্রেমিক সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর, ওই অভিযুক্ত যুবক তার আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে পার্কে ফিরে এসেছিল। মহিলাকে সেখানে একা বসে থাকতে দেখে ফের একবার তার সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ায় তারা। সেই সময়ই একটি গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন অভিযুক্তদের আরেকজন। এরপর, চারজন মিলে রাত ১১টা নাগাদ জোর করে ওই মহিলাকে গাড়িতে তোলে। তাঁকে হোসুর রোড ও নিস রোডের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতার অভিযোগ, এরপর ওই দুষ্কৃতীরা তাঁকে চলন্ত গাড়িতে পালা করে গণধর্ষণ করে। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ইজিপুরার কাছে এক জায়গায় তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্তরা।
এরপর, নির্যাতিতা মহিলা তাঁর মা এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁরা ওই এলাকায় এসে নির্যাতিতাকে নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত ছিল। প্রাথমিক চিকিত্সার পর কোরমঙ্গল থানায় গিয়ে অভিযুক্ত চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার প্রেমিক বন্ধুটি অভিযুক্তদের চিনতেন। কারণ তারা সকলেই একই এলাকার বাসিন্দা। এমনকি নির্যাতিতাকে অপহরণ ও ধর্ষণ করার সময়ও তিনি অভিযুক্তদের ফোন করেছিলেন। তবে তিনি এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন বলেই জানিয়েছে পুলিশ। বেঙ্গালুরুর ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (দক্ষিণ-পূর্ব) সিকে বাবা বলেছেন, নির্যাতিতা অভিযোগ দায়ের করার পরই পুলিশ দুটি বিশেষ দল গঠন করেছিল। মাত্র নয় ঘণ্টার মধ্যেই চারজন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।