নয়া দিল্লি: প্রায় তিন দশক ধরে আলোচনা, পর্যালোচনা। অবশেষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনেই লোকসভায় পেশ হল মহিলা সংরক্ষণ বিল (Women Reservation Bill) সংসদ ও রাজ্য বিধানসভায় মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংসদের দুই কক্ষেই এই বিল পাশ হওয়ার সম্ভাবনা বিপুল। কারণ বর্তমানের বিরোধী দলগুলিও এক সময়ে এই বিল আনতে চেয়েছিল। ইতিমধ্যেই এই বিলের কৃতিত্ব কার, তা নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে সূত্রের খবর, এই বিল চলতি অধিবেশনে পাশ হয়ে গেলেও, তা বাস্তবায়ন হতে অনেক দেরি। ২০২৯ সালে এই বিল প্রস্তাবিত আইনে পরিণত হতে পারে।
সূত্রের খবর, এই বিল পাশ হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত করার জন্য় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পার করতে হবে। এরমধ্যে অন্যতম হল বিধানসভা আসন পুনর্গঠন। তা সম্ভব পরবর্তী আদমসুমারি বা জনগণনার পরই। ২০২৭ সালে সম্ভাব্য জনসুমারি হতে পারে। ফলে তারপরই বিধানসভা আসন পুনর্গঠন করা যাবে। অর্থাৎ মহিলা সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়িত হতে ২০২৯ সাল অবধি সময় লেগে যেতে পারে।
২০০২ সালে সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয়। ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনসুমারির পরই সীমা পুনর্বিন্যাস সম্ভব। আগামী ২০২৬ সালে প্রথম জনসুমারি হওয়ার কথা। এরপরে ২০৩১ সালে জনসুমারি হবে। তারপর সীমানা পুনর্বিন্যাস হওয়ার কথা। ২০২১ সালেই জনসুমারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে তা পিছিয়ে যায়। ২০২৬ সালের বদলে ২০২৭ সালে সম্ভাব্য জনসুমারি হতে পারে।
এই বিল আইনে পরিণত হলে, ১৫ বছরের জন্য তা কার্যকর থাকবে। তবে পরে প্রয়োজন মনে করলে আইনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। প্রতিবার সীমা পুনর্বিন্যাসের পর মহিলাদের জন্য় সংরক্ষিত আসনও পরিবর্তিত হবে।
সংসদে পেশ করা ছয় পাতার বিলে বলা হয়েছে, লোকসভা ও রাজ্যের বিধানসভাগুলির এক তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। নির্বাচনের মাধ্যমেই এই আসন পূরণ করা হবে। রাজ্যসভা ও রাজ্যগুলির আইন পরিষদে এই সংরক্ষণ কার্যকর হবে না। এই সংরক্ষিত আসনের মধ্যে আবার এক তৃতীয়াংশ আসন জনজাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে ওবিসিদের জন্য কোনও আসন সংরক্ষণ থাকবে না। এই বিধান নিয়েই আপত্তি তুলতে পারে সমাজবাদী পার্টি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই তারা মহিলা সংরক্ষণ বিলের বিরোধিতা করে আসছেন ওবিসিদের জন্য আলাদাভাবে আসন সংরক্ষিত না রাখার কারণ দেখিয়ে।