নয়াদিল্লি: ভারতকে বিশ্বের কারখানা হাব বানানোর পরিকল্পনার কথা একাধিক বার শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথায়। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণ করতে গেলে পরিকাঠামোয় বিপুল উন্নতি করতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কারখানা হলেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাঁচামাল আসা বা উৎপাদিক পণ্যকে বিভিন্ন দেশে পাঠানো। এই দুই কাজের জন্য দরকার মালবাহী জাহাজ। পৃথিবীতে এই মুহূর্তে প্রচুর পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে। এক দেশ থেকে অন্য দেশ, এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে পণ্য পরিবহণ হয়। এর মধ্যে কিছু পণ্যবাহী জাহাজ আকারে সুবিশাল। সেই বিশালাকার পণ্যবাহী অনেক জাহাজই ভিড়তে পারে না ভারতের বন্দরগুলিতে। যেমন এই মুহূর্তে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জাহাজ ভিড়তে পারে না ভারতের কোনও বন্দরে। যদিও শ্রীলঙ্কা এবং মালয়েশিয়ার মতো বন্দরে নোঙর করে ওই সমস্ত জাহাজ। এই ব্যাপারে ভারতের পরিকাঠামো গত উন্নতি দরকার বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এই মুহূর্তে বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ এভার অ্যালট। যা লম্বায় নিউ ইয়র্কের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের থেকেও লম্বা। চিনের একটি জাহাজ প্রস্তুতকারক সংস্থা তাইওয়ানের এক পরিবহণ সংস্থার জন্য তৈরি করেছে এই জাহাজ। যা লম্বায় প্রায় ৪০০ মিটার। জাহাজে পণ্যবাহী ২০ ফুটের যে কন্টেনার হয়, সে রকম ২৪ হাজারেরও বেশি কন্টেনার নিয়ে যাওয়া যায় এই জাহাজে করে। কিন্তু এই জাহাজ ভারতে আসতে পারে না। জওহরলাল নেহরু পোর্ট ট্রাস্ট দেশে সরকারি পরিচালিত সবথেকে বড় বন্দর। কিন্তু এই বন্দরে এভার অ্যালট নোঙর করতে ড্রাফ্টের দৈর্ঘ্য আরও ১৭ মিটার বাড়াতে হবে বলে জানা গিয়েছে। এই জাহাজকে এক মাত্র নোঙর করানো যেতে পারে গুজরাটের বেহেমথ-মুন্দ্রা বন্দরে। এই বন্দর গৌতম আদানির মালিকানাধীন। কিন্তু ২০২২ সালে সেখানে সবথেকে বড় যে জাহাজ এসেছিল তা ১৩ হাজার ১৫৯টি টিইইউ কন্টেনার বহন করতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে সমুদ্র পরিবহণ বিশেষজ্ঞ শৈলেশ গর্গ বলেছেন, “বড় জাহাজ বড় মানের অর্থনীতির প্রতিফলক। তবে জাহাজের আকার দিয়েই কেবলমাত্র স্বদেশে জিনিস তৈরির প্রকল্পে গতি আনবে না। এর পাশাপাশি বন্দর থেকে গুদাম, কারখানার পরিবহণ ব্যবস্থা, কারখানা সবকিছুতেই গতি দরকার।” এমনকি জাহাজের যোগাযোগে ভারত যে অনেক পিছিয়ে আছে সে বিষয়টি উল্লেখিত হয়েছিল ২০২২ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্টেও। এ ব্যাপারে ভিয়েতনাম ভারতের থেকে এগিয়ে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল ওই রিপোর্টে।