ধরুন, আপনি নিজের বাড়িতে, বা অফিসে বসে। সেই সময় আপনার স্মার্টফোন বেজে উঠল। আর আপনি দেখলেন, ফোন এসেছে মহাকাশ থেকে। শুনতে অদ্ভুত লাগলো না? হয়তো বলবেন পাগল না পেটখারাপ?
মহাকাশে যাবেই বা কে? সেখান থেকে ফোনই বা করবে কে? উদ্ভোট ব্যাপার। গল্প হলেও সত্যি। আপনার-আমার হাতে থাকা মোবাইল দিয়েই মহাকাশে ফোন অর্থাত্ স্পেস কল সম্ভব।
কয়েকদিন পরেই মহাকাশে একটি নেটওয়ার্কিং স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে একটি মার্কিন সংস্থা। আর সেই স্যাটেলাইটকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করবে ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা।
কী হবে? ডাইরেক্ট কানেক্টিভিটি সার্ভিসের মাধ্যমে সরাসরি মহাকাশে মোবাইল থেকে মহাকাশে কথাবার্তা বলা যাবে। মহাকাশে কথা বলার মতো কেউ নেই। তাতেও কুছ পরোয়া নেই। স্যাটেলাইটকে কাজে লাগিয়ে মনের সুখে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে। অসম্ভব দ্রুত গতিতে ভিডিও ডাউনলোড করা যাবে। এটা এমন একটা প্রযুক্তি যা মোবাইল ফোনকে স্যাটেলাইটের সঙ্গে কানেক্ট করে দেবে।
ইলন মাস্কের স্টারলিঙ্ক যেভাবে কাজ করে, অনেকটা সেরকমই। তবে বড় একটা পার্থক্যও আছে। স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট থেকে নেট পরিষেবা দিতে নিজস্ব টার্মিনাল ব্যবহার করলেও নতুন পরিষেবায় কোনও ফিল্টার থাকছে না। আর এভাবেই নতুন স্যাটেলাইটের হাত ধরেই সাধারণ মানুষের জন্য খুলে যাচ্ছে মহাকাশের দরজা। আর এর সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, এই প্রযুক্তি স্টারলিঙ্কক-কেও পিছনে ফেলে দিতে পারে। এর হাত ধরে দুটো জিনিস হতে পারে। এক, দুনিয়ার যে কোনও জায়গায় যে কোনও সময়ে নেট সার্ভিস পাওয়া যাবে। দুই, অসামরিক বিমানের নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে। কিছু দিন আগেই বিমানের জ্যামার অকেজো করে দেওয়ার করা নিয়ে প্রতিবেদন স্ট্রেট কাটে দেখিয়েছি। স্যাটেলাইট থেকে সরাসরি নেট কানেক্টিভিটি মিললে সেই সম্ভাবনা থাকবে না বললেই চলে। দুনিয়ার ৮টি মহাকাশ সংস্থার মধ্যে ইসরোকেই বেছে নিয়েছে ওই মার্কিন সংস্থা।
টুইটে ইসরোর এই নয়া মাইলস্টোনের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান মন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা ইসরো এনিয়ে আর কিছু বলেনি। তবে আমরা জানতে পারছি, আমেরিকার AST SPACE MOBILE -এই স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাচ্ছে। এরাই ইসরোকে তা মহাকাশে পাঠানোর বরাত দিয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার কাছেও এটা নতুন চ্যালেঞ্জ। এর আগে কখনও এত ভারি, এত ক্রিটিক্যাল স্যাটেলাইট উত্ক্ষেপণ করেনি ইসরো। সেই দিক থেকে সেটা ইসরোর কাছেও বড় পরীক্ষা।