নয়াদিল্লি: প্রাতর্ভ্রমণে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে বাবা-মা এবং দিদির রক্তাক্ত দেহ দেখেছিলেন। পুলিশকে এমনই জানিয়েছিলেন এক যুবক। কিন্তু, তদন্ত এগোতেই যুবকের কথায় অসঙ্গতি দেখতে পায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বাবা, মা এবং দিদিকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাটি দিল্লির।
গতকাল সকালে নেব সরাই এলাকায় ঘরের মধ্য থেকে তিনজনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের নাম রাজেশ কুমার (৫১), তাঁর স্ত্রী কোমল (৪৬) এবং তাঁদের মেয়ে কবিতা (২৩)। ওই দম্পতির পুত্র অর্জুনের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা সেখানে জড়ো হন। তাঁরা দেখেন, ছুরি দিয়ে কোপানো হয়েছে তিনজনকে। রক্তে ঘর ভেসে গিয়েছে। অর্জুন সবাইকে বলেন, তিনি প্রতিদিনের মতো প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনজনের দেহ দেখতে পান।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, বাড়ি থেকে কোনও জিনিস চুরি যায়নি। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি খুনের জন্যই বাড়িতে ঢুকেছিল আততায়ীরা? পুলিশ অর্জুনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সাউর্দান রেঞ্জের যুগ্ম সিপি এসকে জৈন বলেন, “জোর করে বাড়িতে ঢোকার কোনও চিহ্ন পায়নি পুলিশ। কোনও কিছু চুরি যায়নি। মৃতদেহগুলি বিছানায় পড়েছিল। ফলে বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে এটা চুরির ঘটনা নয়। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। অর্জুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর কথায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। শেষ পর্যন্ত তিনি স্বীকার করেছেন যে বাবা, মা এবং দিদিকে কুপিয়ে খুন করেছেন।”
এর আগে অর্জুনের মামা জানান, তাঁর বোনের পরিবারের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না। তিনি বলেন, “রাজেশ সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। অবসর নেওয়ার পর সিকিউরিটি অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। ভাগ্নি কলেজে পড়ত এবং মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট।” বছর কুড়ির অর্জুনও মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট।
কিন্তু, বাবা, মা এবং বোনকে কেন খুন করলেন ওই যুবক?
সাউর্দান রেঞ্জের যুগ্ম সিপি এসকে জৈন বলেন, “অর্জুনের সঙ্গে তাঁর বাবা ও পরিবারের ভাল সম্পর্ক ছিল না। বাবার সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা হত। দিদি-ভাইয়েও ঝগড়া হত। বাবার বকুনি এবং দিদির সঙ্গে ঝগড়ার জেরেই তিনজনকে খুনের ছক কষেন অর্জুন। ৪ ডিসেম্বর বাবা-মার বিবাহ বার্ষিকী ছিল। সেদিনই সবাইকে খুনের পরিকল্পনা করেন। সেনার একটি ছুরি দিয়ে তিনজনকে কুপিয়ে খুন করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন অর্জুন।”