কলকাতা: শারীরিক সম্পর্ক, শারীরিক চাহিদা, যৌনতা নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় প্রায়শই বয়ঃসন্ধিকালে ভুলপথে চালিত হতে দেখা যায় বহু কিশোর-কিশোরীকে। নানা ধরনের অপরাধের ঘটনাও সামনে আসে প্রায়শই। সম্মানহানি, অবসাদের কারণে আত্মহত্যা, খুনের খবরও শোনা যায় দেশ-রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে। আর সে কারণেই বারবার উঠেছে স্কুলে সেক্স এডুকেশনের প্রয়োজনীয়তার কথা। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া অক্ষয় কুমার ও পঙ্কজ ত্রিপাঠি অভিনীত OMG-2 ছবিতেও জোরালোভাবে সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ নিয়ে চর্চা চলছে গোটা দেশে। এবার কৈশোর থেকে কীভাবে শরীরিক চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তার পাঠ শেখাল কলকাতা হাইকোর্ট। শোনা গেল সেক্স এডুকেশনের প্রয়োজনীয়তার কথাও। এ ক্ষেত্রে মা-বাবার ভূমিকার কথাও মনে করিয়েছে রাজ্যের শীর্ষ আদালত। দু’মিনেটের সন্তুষ্টি নয়, বরং নিজেদের শারিরীক চাহিদার নিয়ন্ত্রনে কিশোর-কিশোরীদের মর্যাদা বাড়াবে, পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের।
এদিন একটি ধর্ষণ মামলার শুনানিতে নিজের এমনই পর্যবেক্ষণ বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস ও বিচারপতি পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। বিচারপতিদের মতে, শুধু কিশোরীরা নয়, কিশোরদেরও উচিত মেয়েদের শরীর ও তাঁদের মর্যাদা, আত্মসম্মানের কথা খেয়াল রাখা।
এখানেই শেষ না করে দায়িত্বশীল হয়ে আদালত গাইডলাইনও বানিয়ে দিয়েছে। কিভাবে সংযমী হতে হবে কিশোর কিশোরীদের সে কথাও বলা হয়েছে। কিশোরীদের জন্য বলা হয়েছে, নিজের সম্মান যাতে থাকে সেই খেয়াল রাখতে হবে সর্বদা। ২ মিনিটের সন্তুষ্টির জন্য যৌন চাহিদা মেটানোর পথে না হেঁটে সামাজিক সম্মান কীভাবে রক্ষা হয় সেদিকেও রাখতে হবে খেয়াল। তার কোনও পদক্ষেপ যাতে সামাজিক সম্মানহানির কারণ না হয় সেদিকেও সতর্ক থাকতে বলেছেন বিচারপতিরা।
একইসঙ্গে কিশোরদের উদ্দেশ্যে কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “একজন কিশোরের কর্তব্য কিশোরীদের সম্মান করা। কিশোরীদের মন, তাঁদের মূল্যবোধ, মর্যাদা, গোপনীয়তা, শারীরিক ইচ্ছাকে বুঝে চলা কিশোরদের অবশ্য কর্তব্য। প্রসঙ্গত, এদিন এক নাবালিকাকে ধর্ষনের মামলায় অভিযুক্তকে মুক্তি দিয়ে আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে বারুইপুরে এই ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত কিশোরের পরিবারের দাবি ছিল প্রেমের সম্পর্ক ছিল উভয়ের মধ্যে। যে কিশোরীকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ সে নিজেও আগে অভিযুক্তের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল বলে খবর। সেই মামলাতেই রাজ্যের শীর্ষ আদালতের এই রায় নিয়ে জোর চর্চা নাগরিক মহলে।