TV9 বাংলা ডিজিটাল: নাড্ডার বদলে অমিত শাহর বঙ্গ সফরেই আঁচটা মিলেছিল। কারণ নিজের হাতের তালুর মতো বাংলায় দলের সাংগঠনিক ভিতটা বোঝেন শাহ। আর বঙ্গ নেতৃত্বের বেশি কাছেরও! এরপর ১৩ দিনের ব্যবধানে তিন দফায় রাজ্য বিজেপির (BJP) সঙ্গে বৈঠকে বসছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষের বৈঠক। দিল্লিতে (Delhi) গিয়ে দিলীপ ঘোষ, অরবিন্দ মেনন, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাত্- এই সবই রাজনৈতিক মহলের কাছে স্পষ্ট বার্তাবহক যে একুশের আগে বাংলা সংগঠনকে একেবারে কড়া ‘অনুশাসন’এ রেখেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব (BJP High Command)।
এবার বাংলার সংগঠনকে আরও মজবুত করতে ও কড়া নজরদারিতে রাখতে পাঁচটি জোনে বিভক্ত করলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির পাঁচটি সাংগঠনিক জ়োনের প্রতিটিতে এক জন করে পর্যবেক্ষক এবং আহ্বায়কও নিযুক্ত করা হল। তাঁরা প্রত্যেকেই রাজ্যস্তরের নেতা। ওই নেতাদের দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে কেন্দ্রীয় নেতা। এইভাবে গোটা সাংগঠনিক কাঠামোকে স্তরে স্তরে সাজানো হয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, সুনীল দেওধর মেদিনীপুর জোনের দায়িত্ব নেবেন, বিনোদ সোনকার থাকবেন গোটা রাঢ়বঙ্গের দায়িত্বে। বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক হরিশ দ্বিবেদী উত্তরবঙ্গ ও জাতীয় সাধারণ সম্পাদক দুশান্ত কুমার গৌতম থাকবেন কলকাতা জোনের দায়িত্বে। বিনোদ তিওয়ারি দেখবেন নবদ্বীপ জোন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ত্রিপুরাতে বাম শাসনের পতনে দেওধরের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। অন্যদিকে, মধ্য প্রদেশে দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে গৌতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। উত্তর প্রদেশ নির্বাচনের সময়ে সোনকারের ভূমিকাও মন কেড়েছে মোদী-শাহর জুটির। ফলে তাঁদেরকেই দেওয়া হয়েছে বাংলার দায়িত্ব। একেবারে আটঘাঁট বেঁধে দলের পোড় খাওয়া ‘সেনা’দের নিয়েই বাংলা দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন মোদী ও তাঁর সেনাপতি।
একুশের নির্বাচনের আগে (2021 Assembly Polls) সংগঠনকে একেবারের জালের মতো বিছিয়ে দিতে চাইছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অরবিন্দ মেননের পাশাপাশি দলের আইটি এবং সোশ্যাল মিডিয়া সেলের সর্বভারতীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিত মালব্যকেও রাজ্য বিজেপির আর এক সহ-পর্যবেক্ষক করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
আজ, বুধবার থেকে তিন দিনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা তাঁদের নিজেদের জোন অর্থাত্ এলাকাগুলি পরিদর্শনে যাবেন। জেলাস্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, সেখানে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি ও নিজেদের এলাকা সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরি করে রিপোর্ট জমা দেবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। তারপরই জোন ধরে তৈরি হবে একুশের লড়াইয়ের ‘ব্লু-প্রিন্ট’।
বিজেপি সূত্রে খবর, চলতি মাসের ৩০ তারিখ আরও একবার বঙ্গসফরে আসতে পারেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের দেওয়ার রিপোর্টের ওপরেই নির্ভর করছে তাঁর পরবর্তী বঙ্গ সফরের নির্ঘণ্ট। যদিও এবিষয়ে এখনও কিছুই নিশ্চিত নয়।
একুশের নির্বাচনের আগে বাংলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আনাগোনা বাড়বে। পাল্লা দিয়ে বাড়বে বৈঠক, র্যালিও। ঘন ঘন কর্মসূচিতে উঠে আসবে লড়াইয়ের একাধিক ‘অস্ত্র’। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব যে তাতে প্রস্তুত, তাও স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপির এই অতি তত্পরতা অবশ্যই ভাবাচ্ছে শাসকশিবিরের ভোট স্ট্র্যাটেজিস্টকেও।