কলকাতা: কেন বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সই করছেন না রাজ্যপালরা? কেন আদালত পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে সেই মামলা? পঞ্জাব সরকারের করা একটি মামলায় এই ভাষাতেই বার্তা দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিলে সই না করায় তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপালদের। সুপ্রিম কোর্টের সেই পর্যবেক্ষণ কি এ রাজ্যেও প্রভাব ফেলবে? তেমনটাই আশা করছে রাজ্য। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “আশা করি রাজ্যপালরা এই পর্যবেক্ষণ মানবেন।” বাংলাতেও বেশ কয়েকটি বিল পড়ে রয়েছে। সেই তালিকার কথা উল্লেখ করে স্পিকারের জানিয়েছেন, বিল যাতে সই করা হয়, সেই আবেদন ফের জানানো হবে রাজ্যপালকে।
স্পিকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মোট ২২টি বিল আটকে আছে রাজ্যপালের কাছে। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন, ‘রাজ্যপালের এক্তিয়ার নেই বিল আটকে রাখার। সংবিধানে বলা আছে। সুপ্রিম কোর্ট এর পর্যবেক্ষণ আশা করি সব রাজ্যপালরা মানবেন। বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে বেশি বিল আটকে আছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘উনি তো অনেক লোক নিয়োগ করছেন। বিল-এর ত্রুটি বিচ্যুতি দেখার জন্যও লোক নিয়োগ করা উচিত। ওঁর সংশয় যদি কিছু থাকে আমাদের মতামত নিতে পারেন। জনগণের জন্য বিল পেশ করা হয় বিধানসভায়। সেই বিধানসভাকে মর্যাদা দিতে হবে রাজ্যপালকে।’
জানা গিয়েছে, ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনটি বিল পড়েছিল রাজভবনে, ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৪টি বিল সই না করা অবস্থায় পড়েছিল, ২০২১ থেকে এখনও পর্যন্ত আরও ১৫টি বিল পড়ে আছে। সব মিলিয়ে ২২টি বিল পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন স্পিকার। সি ভি আনন্দ বোস জমানায় বিল আটকে আছে ৬টি।
শুধুমাত্র বাংলায় নয়, বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যপালরা বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল কেন আটকে রেখেছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এই নিয়ে সতর্ক করেছে রাজ্যপালদের। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই যাতে বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়, সেই বার্তাই দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালদের।
পঞ্জাবের আপ সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানানো হয়েছিল সে রাজ্যের রাজ্যপাল বনওয়ারিলাল পুরোহিতের বিরুদ্ধে। পঞ্জাব সরকারের অভিযোগ, সে রাজ্যের বিধানসভায় পাশ হওয়া ২৭টি বিলের মধ্যে মাত্র ২২টিতে সই করেছেন রাজ্যপাল। অর্থ ও শিক্ষা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিলেও সই হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।