কলকাতা: তৃণমূলের শিক্ষাসেলে সংস্কার। আবাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠল কি নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব? অধ্যাপক ও শিক্ষকদের সংগঠন থেকে বাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিতরা। সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতিতেই এই তালিকা হয়েছে বলে দাবি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। কমিটিতে জায়গা হল না, নিজেকে ‘অভিষেক সেনা’ বলে দাবি করা অধ্যাপক মণশঙ্কর মণ্ডলেরও। একই অবস্থা মইদুল ইসলামেরও। রাজ্য সভাপতি থেকে জেলা সব পদেই বদল আনল তৃণমূল। ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কাজ করি, তাই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এমনই বিস্ফোরক মইদুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, মুখে কেউ শিকার না করলেও শাসকদলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নতুন নয়। একাধিক ইস্য়ুতে বারেবারে প্রকাশ্যে তা চলেও এসেছে। যদিও, সম্প্রতি অভিষেককে বলতে শোনা গিয়েছিল,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই চেয়ারপার্সন। তাঁর কথাই শেষ কথা। সকলে তাঁরই নির্দেশে চলে। বাকি সবটাই মিডিয়ার তৈরি করা হাইপ। তবে তৃণমূলের শিক্ষাসেলের এই রদবদল কিন্তু এবার বলছে অন্য কথা। অন্তত, তেমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
মইদুল ইসলাম। বলা হয় বহু আন্দোলনের নায়ক। সরে যেতে হয়েছে তাঁকে। কয়েকদিন আগে মণিশঙ্কর মণ্ডল যিনি কি না ওয়েবকুপার সহ সভাপতি,তাঁকেও সরতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মইদুল বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে আমরা পোস্ট করি। তাঁকে সমর্থন করি। আমাদের একাধিকবার হুমকি দেয়। আসলে যাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে পোস্ট করবে, তাঁরা দল বিরোধী কাজ করছে। তাঁদের সরিয়ে দাও। তাঁদের কোনও কাজ করতে হবে না। এই রকম বিশৃঙ্খলা তৈরি চেষ্টা চলছিল। আজ সরিয়ে দেওয়া হল।” অপরদিকে, পুরুলিয়ার শিক্ষা সেল থেকে অপসারিত জেলা সভাপতি সোনালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ব্রাত্য বসুর এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি লিস্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেই লিস্টে উনি বলেছেন সমস্ত জেলা সভাপতিদের সুপারিশক্রমে এই লিস্ট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আমার জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া আমার নামটি সুপারিশ করেন। কিন্তু আমার নাম রাখা হয়নি। এক্ষেত্রে আমার রাজ্য সভাপতি মইদুল ইসলামের নাম বাদ পড়েছে। আমার মনে হয় এই লিস্টটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মানি। অভিষেককে সমর্থন করি বলেই কি রোষানলে পড়তে হল? আমরা সমর্থন করি বলেই কি দল বিরোধী কাজ করছি? এটা প্রশ্ন রইল।” শিক্ষাসেলের রাজ্য কার্যকরী অপরসারিত সভাপতি বুবাই কোলে বলেন, “অভিষেকের প্রচারের সঙ্গী থাকি। আমাদের মাননীয় মন্ত্রী তাই সহ্য করতে পারেন না। সেই কারণে পদ থেকে সরিয়ে দিলেন।”
এ দিকে, এই তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই বড় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু নিজের এক্স হ্যান্ডেলে যে পোস্ট করেছেন, তাতে লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই তালিকা’।
যদিও, নতুন এই তালিকা নিয়ে কোনও মন্তব্য় করতে চাননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নতুন তালিকা প্রকাশ্যে আসতে দলের অন্দরের আড়াআড়ি চিড় যে এবার সকলের সামনে আসতে শুরু করছে তা মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।