কলকাতা : বাংলায় কি আবার আছড়ে পড়তে চলেছে কোনও ঘূর্ণিঝড়?এমন আশঙ্কা ইতিমধ্য়েই জাগতে শুরু করেছে। সাগরে গভীর নিম্নচাপের আশঙ্কা রয়েছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কারণ, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্তের জেরে যে নিম্নচাপের সম্ভাবনা রয়েছে, তা আগেই জানিয়েছিল TV9 বাংলা। এবার হাওয়া অফিস আশঙ্কা করছে এই নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আবহাওয়াবিদরা। কারণ, এই গভীর নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে উত্তর পশ্চিম অভিমুখে এগোবে। যদি আন্দামান সাগর থেকে এই দিকে কোনও নিম্নচাপ এগোয়, তাহলে সেটির সম্ভব্য অভিমুখ হয় পূর্ব উপকূল। সেক্ষেত্রে তার অভিমুখে বাংলা, ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশ বা পূর্ব উপকূলের যে কোনও রাজ্য এমনকী বাংলাদেশও পড়তে পারে।
এ ক্ষেত্রে যে প্রশ্নটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা হল এই নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হলে, পরবর্তীতে সেটি কি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে? মে মাস এমনিতেই ঘূর্ণিঝড় প্রবণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। অতীতে মে মাসে একাধিক ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। ১৯২৭, ১৯৩২, ১৯৩৬, ১৯৫৬, ১৯৬০, ১৯৮৯ সালে সরাসরি বাংলায় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল বাংলায়। সবগুলিই ছিল মে মাসে। মে মাসে অন্তত আটটি ঘূর্ণিঝড় সরাসরি প্রভাব ফেলেছে বাংলায়। আয়লা, ইয়াস, আমফান, ফণীর মতো ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়গুলিও মে মাসেই হয়েছিল। ২০০৯ সালের ২৫ মে আছড়ে পড়েছিল আয়লা। ২০২০ সালের ২০ মে বাংলায় আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আমফান। এছাড়া ২০১৯ সালে ফণী, ২০২১ সালে ইয়াস – সবই হয়েছে মে মাসে। আর এতেই আশঙ্কা বাড়ছে আবহাওয়াবিদদের।
নিম্নচাপ সৃষ্টি হাওয়া মানেই যে সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে, এমনটা নয়। কিন্তু যেহেতু আন্দামান সাগর থেকে পূর্ব উপকূল অনেকটা দূরে, তাই অনেকটা পথ অতিক্রম করতে পারবে ওই নিম্নচাপটি। ফলে শক্তি বাড়ানোর জন্য অনেকটা সময় পাওয়া যাবে। ফলে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হাওয়ার একটি আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, ৬ মে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে। তারপর পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তারপর এটি আরও শক্তি বাড়ায় কি না, সেদিকে অবিরাম নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।