কলকাতা: আবাস যোজনার (Awas Yojana) তালিকা নিয়ে জেলায় জেলায় বেশ অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। অনেক জায়গায় দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েতের প্রধান বা উপপ্রধানের পরিবারের কারও নাম রয়েছে ঘর পাওয়ার তালিকায়। অথচ সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেরই পাকা বাড়ি রয়েছে, কারও তো বাড়ি আবার প্রাসাদোপম। আবাসের তালিকায় নাম প্রকাশ্যে আসতেই বিডিও-র কাছে ছুটেছেন নেতারা। নিজেরাই নাম কাটিয়েছেন। এই নিয়ে খোঁচা দিতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। এবার সেই নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বললেন, “তালিকাগুলি ভালভাবে দেখলে বোঝা যাবে, তালিকাগুলি হয়েছিল ২০১৮ সালে। সবথেকে বেশি অভিযোগ আসছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে। দায়িত্বে কে ছিল তার নাম আমি আর বললাম না।”
অভিষেক বললেন, “এটি ২০২১ সালের তালিকা নয়। এটি ২০১৮-র তালিকা, ২০১৭-র তালিকা, ২০১৯-র তালিকা। সংবাদমাধ্যমে ইতিমধ্যে বেরিয়েছে, সবথেকে বেশি প্রায় ৪০ শতাংশ নাম বাদ গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। যে নামগুলি বাতিল করা হয়েছে, সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। দায়িত্বে কে ছিল? কোন পরিবার ছিল? প্রধান কারা নির্বাচিত করেছিল? নিশ্চিতভাবে দলীয় তরফে আমাদের ভুল হয়েছে। আমরা একজনকে বিশ্বাস করেছিলাম। সেই জন্য কাঁথির জনসভা থেকে মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চেয়েছি।”
তৃণমূল কংগ্রেস যে দুর্নীতিকে কোনওভাবেই বরদাস্ত করে না, সেই কথা এদিন বার বার বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রতিটি স্তরের আধিকারিকদের কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যাঁরা প্রকৃত দাবিদার, তাঁরাই যেন বাড়ি পান। হতে পারে, প্রধান, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে তালিকা এসেছে। কিন্তু সেই তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা প্রকৃত যোগ্য কি না, তা যাচাই করার জন্য ছয়-আট মাস সময় লাগে। রাজ্য সরকার তা একমাসে করে দেখিয়েছি।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “এখন তো অধিকারীরা নেই। এখানে অধিকারী পরিবারের কোনও ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি না। আবাস যোজনার তালিকা তো সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। কে করেছে? ব্লক প্রশাসন আর জনগণের প্রতিনিধি নয় তৃণমূলের এমন লোকেরা। ব্লক প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানদের নিয়ে এইসব করা হয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী সিনড্রোমে ভুগছে তৃণমূল দলটা। স্বাভাবিকভাবে তারা যে কোনও সমস্যাতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম দেগে দিচ্ছেন। সকলেই অবগত কী ঘটেছে, কেন ঘটেছে।”