কলকাতা : ‘গুড় বাতাসা’ বা ‘নকুলদানা’, তত্ত্ব যাই হোক না কেন, বীরভূমের সংগঠনের ক্ষেত্রে যে শেষ কথা ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, এ কথা মেনে নেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি দলের সংগঠনে রদবদল হলেও বীরভূমের দায়িত্বে ছিলেন অনুব্রতই। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক যতই থাক, ভোটে সাফল্যে এনে দিয়ে বরাবরই শীর্ষ নেতৃত্বে নজরে থেকেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরও তাঁকে ‘ভাল সংগঠক’ বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তবে আপাতত সিবিআই হেফাজতে তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বোলপুরে ফিরতে পারবেন কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। তাই বীরভূমের দিকে দল বাড়তি নজর দিচ্ছে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই বীরভূম নিয়ে বিশেষ বৈঠকে বসতে পারেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক জেলার সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন। উত্তরের জেলাগুলি দিয়ে শুরু হয়েছে সেই বৈঠক। শুক্রবার ফের এক দফা বৈঠক রয়েছে। এ দিন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর- এই তিন সাংগঠনিক জেলা নিয়ে বৈঠকে বসবেন অভিষেক। আর পরের সপ্তাহেই বীরভূম নিয়ে বৈঠক হবে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, এতদিন পর্যন্ত কার্যত অনুব্রত একাই সামলাতেন সংগঠন। নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁরই হাতে। কিন্তু, এবার কৌশল বদলাতে পারে দল। সম্ভবত আর কোনও এক ব্যক্তির ওপর ভরসা করা হবে না। এলাকা ভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে একাধিক নেতাকে। লোকসভা কেন্দ্রের ভিত্তিতে বা মহকুমার ভিত্তিতে সেই দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
একসময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল এই বীরভূম। কিন্তু গত কয়েক বছরে তৃণমূল যে ভাবে সংগঠন বিস্তার করেছে, তার নেপথ্যে যে অনুব্রত ছিলেন, সে কথা স্বীকার করে নেন দলের অনেক নেতাই। তবে বৃহস্পতিবারের ঘটনা বদলে দিয়েছে অনেক কিছুই। গরু পাচার মামলায় বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতাকে। এ দিকে আবার দল বলছে, দুর্নীতি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। অনুব্রতর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থার কথা না দল না জানালেও, দলের একসময়ের ‘সম্পদ’কে নিয়ে যে অস্বস্তি বাড়ছে, তা বেশ স্পষ্ট।