কলকাতা : উচ্চপদস্থদের হাত না থাকলে নীচুস্তরে দুর্নীতি হওয়া সম্ভব নয়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম সামনে আসার পর এমনটাই বলছেন চাকরি প্রার্থীরা। বঞ্চনার অভিযোগে, যাঁরা মাসের পর মাস রাস্তায় বসে রয়েছেন, তাঁদের দাবি, অভিষেককে ডাকা হলে তাঁকে যেতে হবে, দোষ করলে শাস্তিও পেতে হবে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগেও সামনে এসেছে অনেক হেভিওয়েটের নাম। গ্রেফতারও হয়েছেন কেউ কেউ। এবার সেই মামলায় এজলাসে উঠল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম। তাঁকে কেন্দ্রীয় সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এই প্রসঙ্গে এক আন্দোলনকারী চাকরি প্রার্থী বলেন, ‘ইডি-সিবিআই সম্পর্কে আদালতে অভিষেকের নাম এসে থাকলে, তঁকে যেতে হবে। দোষী হলে শাস্তিও পেতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনও কেলেঙ্কারিতেই নীচুস্তর থেকে উঁচু স্তরের নাম ক্রমশ সামনে আসে। আর উঁচু স্তরের হাত না থাকলে নীচু স্তরে কেলেঙ্কারি সম্ভব নয়।’
অভিষেকের নাম শুনে শুভদীপ মান্না নামে আর এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘প্রথম থেকেই জানতাম যে রাঘব-বোয়ালরা যুক্ত। এটা সবাই বুঝতে পেরেছিল যে হেভিওয়েট ছাড়া কোনওভাবে এই দুর্নীতি সম্ভব নয়। শুধু অভিষেক নয়, আরও অনেক প্রভাবশালীদের নাম আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি।’ তাঁর দাবি, যাঁদের জন্য শাস্তি পাচ্ছেন বঞ্চিতরা, তাঁদেরকেও শাস্তি পেতে হবে।
আর এক চাকরি প্রার্থী এই প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছরের ৩ মে ইদের দিনে অভিষেক কথা দিয়েছিলেন তিনি নিজে বিষয়টা দেখবেন। আরও এক ইদ আসতে চলেছে। এখনও সমস্যা মেটেনি।
আন্দোলকারীদের দাবি, এভাবে একের পর এক হেভিওয়েটের নাম আসতে থাকবে, তবে তাঁরা কবে হকের চাকরি পাবেন, সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। তাঁদের দাবি, দলের লোকজনই দুর্নীতি করেছে, এ কথা মানতে হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। তাঁকে ধরনা মঞ্চে আসতে বলেও দাবি করেছেন চাকরি প্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, একটি সভায় অভিষেক বলেছিলেন তাঁর নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে কুন্তল-সহ নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত অন্য ধৃতদের। নিয়োগকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষও এমন দাবি করেছেন একাধিকবার। অভিষেকের সঙ্গে কুন্তলের কথার মিল আছে বলেই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। সম্প্রতি হেস্টিংস থানায় সেই অভিযোগ তুলে এফআইআর করেন কুন্তল। কুন্তলের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। সেই মামলাতেই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।