Bag Committee Report: ‘কেঁদেই চাকরি SSC-র গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি-তে’! আর কী কী আছে বাগ কমিটির রিপোর্টে?

TV9 Bangla Digital | Edited By: অংশুমান গোস্বামী

May 26, 2022 | 8:00 PM

SSC Recruitment Scam: দুর্নীতির বিষয় নিয়ে বাগ কমিটির পর্যবেক্ষণ, গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি-তে এমন কয়েকশো কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে যাঁরা পরীক্ষাতেও বসেননি। নাম লিখে জমা দেওয়া সাদা খাতায় প্রয়োজনীয় উত্তর বসিয়েও নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

Bag Committee Report: কেঁদেই চাকরি SSC-র গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি-তে! আর কী কী আছে বাগ কমিটির রিপোর্টে?
প্রতীকী ছবি

Follow Us

কলকাতা: এসএসসি নিয়োগে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি হয়েছে বলে জানা গেল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগ কমিটির রিপোর্টে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, কেবলমাত্র মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে নয়, গোটা প্যানেলেই একাধিক অনিয়মের ইঙ্গিত রয়েছে। তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) আবেদন করিয়ে বেআইনিভাবে নম্বর বাড়িয়ে নিয়োগ করেছে এসএসসি। আগে থেকে পরিকল্পনা করেই এই কাজ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে বাগ কমিটি। মেধা তালিকায় নীচের দিকে নাম ছিল, অথচ চাকরি দেওয়া হবে, এ রকম প্রার্থীদের দিয়ে আরটিআই করানো হয়। তার পর তাঁদের নম্বর বাড়িয়ে সুপারিশপত্র দেয় এসএসসি। সেই সুপারিশপত্রের ভিত্তিতেই নিয়োগ পত্র তৈরি করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বাগ কমিটি জানিয়েছে, গোটা প্রক্রিয়াটাই অবৈধ। এর পাশাপাশি নিয়োগ নিয়ে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির বয়ানে অস্বস্তি বাড়তে পারে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

উল্লেখ্য, দুর্নীতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি মণীশ জৈনকে ডেকে পাঠিয়েছিল বাগ কমিটি। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর নিয়োগ নিয়ে কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। তিনি আরও জানিয়েছেন, রুল অব বিজেনেস অনুসারে, এই ধরনের কমিটি গড়ার অধিকার একমাত্র মন্ত্রীরই রয়েছে। সে সময় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই কমিটি তৈরি করেছিলেন বলেও বাগ কমিটিকে জানিয়েছেন মণীশ জৈন। তাঁর এই দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

দুর্নীতির বিষয় নিয়ে বাগ কমিটির পর্যবেক্ষণ, গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি-তে এমন কয়েকশো কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে যাঁরা পরীক্ষাতেও বসেননি। নাম লিখে জমা দেওয়া সাদা খাতায় প্রয়োজনীয় উত্তর বসিয়েও নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, যাবতীয় নথি তৈরি করে নিয়োগ করা হলেও, সেই নথি পরে নষ্ট করে দেওয়া হয়। ওএমআর শিট পর্যন্ত রাখা হয়নি। পাশাপাশি ওএমআর শিট পুনর্মূল্যায়ন করতে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিল এসএসসি। কিন্তু যে সংস্থাকে পুনর্মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছিল বলে এসএসসি-র দাবি তারা ইমেল মারফত বাগ কমিটিকে জানায়, ওএমআর শিটের কোনও পুনর্মূল্যায়ন করা হয়নি। আরটিআই করিয়ে নম্বর বাড়ানোর যে বিষয়টি উঠে এসেছে বাগ কমিটির রিপোর্টে, তাও অবৈধ। অযোগ্যদের চাকরি দিতেই ওই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছিল বলেই জানানো হয়েছে।

আরটিআই করে নম্বর বাড়িয়ে চাকরি পেয়েছেন এ রকম ৪২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল বাগ কমিটি। আরটিআই আবেদনকারীরা বাগ কমিটি-কে জানিয়েছে, কান্নাকাটি করায় তাঁদের আবেদন করতে বলা হয়। এর পরই তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়। এই সব চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নোটিফিকেশন জারি হয়নি। এমনকি ডিআই-কে না জানিয়েই হাতে হাতে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে বাগ কমিটি। কিন্তু নিয়ম অনুসারে, কোন স্কুলে পোস্টিং পাবে, তা ঠিক করার জন্য় রিজিওনাল কমিশন বিভিন্ন জেলার দায়িত্বে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে সে সব এড়িয়েই নিয়োগপত্র দেয় এসএসসি। কী ভাবে তা হল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আরটিআই-এর কথা বললেও ওই চাকরিপ্রাপকরা আরটিআই-এর কোনও কপি বাগ কমিটিকে দেখাতে পারেননি।

সিবিআই সূত্রের খবর, যাবতীয় বেআইনি কাজ মেনে নেওয়ার পুরস্কার হিসাবে এসএসসি-র এক প্রাক্তন কর্তার মেয়েকে চাকরি দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর নাম ছিল না মেধাতালিকায়। তাঁকে একটি মামলা করতে বলা হয়, তার পর তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়েকে চাকরি দিতেও এ রকম অনিয়মই করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে রয়েছে বলে দাবি। তা পরিষ্কার উঠে এসেছে বাগ কমিটির রিপোর্টে।

Next Article