Kamduni Verdict: রাতেই কামদুনিতে সিআইডি, রায় নিয়ে কী বলছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিভাস চক্রবর্তীরা
HC: ২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। নিম্ন আদালত ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তিনজনের ফাঁসির সাজাও দেয়। বাকি তিনজনেরও শাস্তি হয়। তবে এরপর মামলা যায় হাইকোর্টে।
কলকাতা: কামদুনি মামলার রায়ে হতাশ নির্যাতিতার পরিবার। খুশি নয় কামদুনির মানুষ। রায় শুনে আদালত চত্বরেই শুক্রবার কান্নায় ভেঙে পড়েন এই লড়াইয়ের দুই মুখ মৌসুমী কয়াল ও টুম্পা কয়াল। রাজ্য সরকারও সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। স্পেশাল লিভ পিটিশন ফাইল করতে চলেছে রাজ্য। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই সুপ্রিম আদালতে যেতে চায় রাজ্য। তারই তোড়জোর করতে আজ রাতেই মৌসুমী কয়ালের বাড়িতে গিয়েছিল সিআইডির টিম। ২০ মিনিট ছিল সেখানে। সেখানে ছিলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা।
১১টার কিছু আগে সিআইডির একটি দল কামদুনিতে ঢোকে। মৌসুমী কয়ালের বাড়িতে যায় তারা। সেখানেই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তাদের। নির্যাতিতার ভাই বলেন, “সিআইডি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা বলছে। তবে আমাদের সিআইডিতে ভরসা নেই প্রথম থেকেই বলেছি। কাল কামদুনি মোড়ে অবরোধ-অনশন চলবে। আমরা শনিবারই বসে আলোচনা করব রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে।” নির্যাতিতার পরিবার প্রশ্ন তুলছে, যদি দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসি হতে পারে, কামদুনির ঘটনায় নয় কেন?
নির্যাতিতার মা বলেন, “আমরা সুপ্রিম কোর্ট যাব। দিল্লির ঘটনায় ফাঁসি হল, আমাদের ঘটনায় কেন হবে না? ফাঁসি চাই। পুলিশ, সিআইডি, ডাক্তারি রিপোর্ট কোনওটাই ভালভাবে দেওয়া হয়নি। তার জন্যই এই বিচার। আগে যে বিচার হয়েছিল, আমরা তাতেই খুশি ছিলাম। রাজ্য সরকারের পায়ে ধরছি, পুরনো রায় বহাল থাকুক।”
নির্যাতিতার বাবার কথায়, “মেয়ের বাবা আমি, কী করে মানব? কেন এটা করল? দিল্লি বিচার পেলে কামদুনি কেন বিচার পাবে না? আমরা সুবিচার চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাব। ওরা ফিরে এলে যদি আবার গ্রামে ঢোকে, আবার তো অত্যাচার করবে। সকলে ভয় পাচ্ছে। গ্রামে একটা পুলিশ ফাঁড়ি করা হোক।”
২০১৩ সালে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। নিম্ন আদালত ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তিনজনের ফাঁসির সাজাও দেয়। বাকি তিনজনেরও শাস্তি হয়। তবে এরপর মামলা যায় হাইকোর্টে।
শুক্রবার হাইকোর্টে রায়দান হয় এই মামলার। আদালত এক ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত-সহ আরও একজনকে বেকসুর খালাস করে দেয়। বাকি দুই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তের আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়। অন্য দু’জন খালাস হয় ১০ হাজার টাকা জরিমানার বদলে। এই রায়ে হতাশ নির্যাতিতার পরিবার, কামদুনি।
এই রায় প্রসঙ্গে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “হতাশার কারণ হয়ত আছে। ওঁরা প্রত্যাশা করেছিলেন নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকবে। সেটা হয়নি বলে হতাশ হয়েছে। আদালত কী বিচার করেছে তা সম্পর্কে আমার তো কোনও ধারণা নেই। কাজেই এ নিয়ে বলতে পারব না। তবে এটা নিয়ে একটা হতাশার সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।”
অন্যদিকে নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তী বলেন, “কামদুনি মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানি না। কামদুনিতে যা হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমে যা এসেছিল, তা দেখেছি জেনেছি। এর থেকে কোনও সিদ্ধান্ত তো নেওয়া যায় না। একটা ধারণা হতে পারে। তাতেই মনে হয়েছিল এটা একটা গুরুতর অপরাধ। নৃশংস হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ। আমরা ধরে নিয়েছিলাম যে যথাযোগ্য শাস্তি পাবে অপরাধীরা। তবে শেষ পর্যন্ত যে রায়টা শুনলাম, হতাশ বোধ করছি।”