কলকাতা: বাংলার লড়াই এখন দিল্লির বুকে। অভিষেক বনাম শুভেন্দুর দ্বৈরথের সাক্ষী এখন রাজধানী দিল্লি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলার দাবি ঘিরে দিল্লি যাত্রা এক প্রকার পরিষ্কার করে দিয়েছে বাংলার বঞ্চনার ইস্যু সামনে রেখেই লোকসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে চায় তৃণমূল। এরইমধ্যে বিজেপির বঙ্গ ব্রিগেডের দিল্লি যাত্রা যেন বাংলার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের তৃণমূল বনাম বিজেপি বাইনারির সম্ভাব্য ন্যারেটিভ প্রতিধ্বনিত করছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে দিল্লিতে সরব হয়ে পাল্টা চাপ বজায় রাখার কৌশল নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। সব মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের বিহগল বাজিয়ে দিল বাংলার শাসক আর বিরোধী দলের নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুতে ধরনা বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর । পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারাও এখন দিল্লির বুকে বাংলার শাসক দলের মিথ্যাচার নিয়ে সরব। সোজা কথায়, দিল্লি সরগরম বাংলা নিয়ে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছটায় কৃষি ভবনে কেন্দ্রের টাকা আটকে রাখা নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবে তৃণমূল। অন্যদিকে এদিনই বিকেল চারটের সময় কেন্দ্রীয় গ্রামীণ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য কত টাকা আত্মসাৎ করেছে তা নিয়ে তথ্য তুলে ধরেন বলে খবর। কত কেন্দ্রীয় প্রকল্প লাগু হতে দিচ্ছে না। ইউপিএ আমল থেকে কত বেশি টাকা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে দেয়। এসব তথ্যই তুলে ধরেন শুভেন্দু। একেবারে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর।
কিন্তু এই দ্বৈরথের পেছনে আরও একটা বাধ্যবাধকতা কাজ করছে বঙ্গ বিজেপির কাছে, এমনই মত ওয়াকিবহাল মহলের মতে। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুকে সামনে রেখে নির্বাচনী সাফল্য পেয়েছে তৃণমূল। বুথ স্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন দলের শীর্ষ মুখ। পাড়া বৈঠকে টাকা না পাওয়ার কথা মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। স্পষ্ট বুঝিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার জন্যই তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছায়নি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফল হয়েছে। এখন এই সফল ইস্যুকে সামনে রেখেই লোকসভাতেও লড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল । বিষয়টা এক তরফা প্রচার হলে ব্যাকফুটে যাবে বঙ্গ বিজেপি। কারণ নগদই যে নারায়ণ। আর নগদ মানুষের কাছে সব চেয়ে বড় ইস্যু। তাই বঙ্গ বিজেপিও তৃণমূলকে রুখতে এখন দিল্লিমুখী। পাল্টা যুক্তি আর তথ্য তুলে ধরে তৃণমূলকে ফাঁকা মাঠে গোল করার সুযোগ দিতে চায় না বাংলার বিজেপি নেতারা। কেন্দ্রীয় বিজেপির ও স্ট্র্যাটেজি তাই। এখন দেখার এই দ্বৈরথের কতটা ছাপ পড়ে লোকসভা নির্বাচনের সময়।