কলকাতা: তিন দিন পেরিয়ে গেলেও অচলাবস্থার কাটল না কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Calcutta Medical College)। শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিন পরিষেবা না পেয়ে ফিরতে হচ্ছে বহু মানুষকে। সেই ইস্যুতেই পরপর দুটি মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। একটি মামলায় নির্দিষ্ট রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হলেও, সব রোগীর ক্ষেত্রে মিলল না স্বস্তি। গত কয়েকদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। এখনও পর্যন্ত সেই নির্বাচনের আশ্বাস না মেলায় আন্দোলন জারি রয়েছে। তার জেরেই রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে, আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিহারের এক বাসিন্দা। শিশুপুত্রের চিকিৎসার জন্য বিহার থেকে কলকাতায় এসেছেন তিনি। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার।
ওই শিশুর কিডনি বাদ দিতে হবে। মেডিক্যালে পরিষেবা বন্ধ থাকায় সেই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার। আদালতে কলকাতা মেডিক্যালের সুপার ও অধ্যক্ষের তরফে আইনজীবী জানিয়েছেন, বিক্ষোভের জন্য সেন্ট্রাল ল্যাব থেকে শুরু করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তার তরফে দাবি করা হয়েছে, এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ভবনের আর কিছু করার নেই।
সব পক্ষের কথা শুনে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, স্বাস্থ্য দফতর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আন্দোলনরত ছাত্রদের নিশ্চিত করতে হবে যেন অস্ত্রোপচার নির্বিঘ্নে হয়। শুক্রবার বিকেল ৫ টার মধ্যে যাতে গোটা প্রক্রিয়া বিনা বাধায় সম্পন্ন হয়, তেমনই নির্দেশ আদালতের। তবে একটি ক্ষেত্রে স্বস্তি মিললেও সার্বিক কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি এদিন। রাজ্যের তরফে আর্জি জানানো হয়েছিল যাতে, আদালতের অচলাবস্থা কাটে। বিচারপতি বলেন, ‘আমি চাই এই নির্দেশ সবার জন্য কার্যকর হোক, কিন্তু যেহেতু এটা জনস্বার্থ মামলা নয়, তাই আমি এই নির্দেশ দিতে পারি না।’
উল্লেখ্য, পরিষেবা ব্যহত হওয়ার অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করেছেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার অভিযোগও ঠিক নয়। এদিকে, দেড় দিন পর সুপার বা অধ্যক্ষদের ঘেরাও মুক্ত করা হলেও পড়ুয়ারা সাফ জানিয়েছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আশ্বাস না দেওয়া হলে তাঁরা বিক্ষোভ তুলবেন না। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন মেডিক্যালের বেশ কয়েকজন ছাত্র।