কলকাতা: ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (JNU) বিক্ষোভ প্রদর্শন ও বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অভিযোগে তাঁকে শো-কজ নোটিস পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেই চিঠি পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিশানা করলেন ঐশী ঘোষ (Aishi Ghosh)। তিন বছরের পুরনো ঘটনায় আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঐশীর জবাব তলব করেছে জেএনইউ। যা নিয়ে এসএফএই নেত্রী তথা একুশের ভোটের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থীর মন্তব্য, এত দেরি হল কেন? আর জেএনইউ-তে তাঁর সিনিয়র তথা আরেক সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধরের টিপ্পনী, এই নোটিস তো প্রেমপত্র। যে কোনও প্রতিবাদ করলেই জেএনইউ এই নোটিস পাঠাত
কী নিয়ে এই নোটিস? আর তা নিয়ে ঐশীর প্রতিক্রিয়া কী?
সংশ্লিষ্ট শো-কজ নোটিসে লেখা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তরের ছাত্রী ঐশী ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন। এই ধরনের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বিরুদ্ধ। এ নিয়ে ঐশী জানান, “২০১৮ সালের একটি ঘটনা, যেখানে আমাদের জন্য একটি বৈঠক করা যায়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয় অভিযোগ করে, তার জবাবদিহি ইতিমধ্য়ে দিয়ে দিয়েছি।” কিন্তু তাহলে এতদিনে কেন সেই ঘটনার জের?
প্রশ্ন শুনে একই প্রশ্ন করলেন ঐশীও। তাঁর কথায়, “২০১৮ সালের প্রোটেস্টের ঘটনা তুলে এনে এখন ১০ দিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হচ্ছে। এবং বলা হচ্ছে, তুমি উত্তর যদি না দাও, পদক্ষেপ করা হবে। আর সেই পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে ফাইন, হস্টেলও পরিবর্তনের নির্দেশ আসতে পারে।”
ঐশী আরও যোগ করেন, “আপাতত আমি ও আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকেত (মুন) এই শো-কজ নোটিস পেয়েছি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের এই শো-কজ নোটিস পাঠানো কাজ নয়। হঠাৎ তিন বছর পর এই নোটিসের কী প্রয়োজন ছিল?” ঐশীর কটাক্ষ, “আমি মনে করি পড়ুয়াদের শো-ক জ করা ছাড়াও আরও জরুরি কিছু কাজ আছে কর্তৃপক্ষের। পড়ুয়াদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া, ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের ফিরিয়ে আনা ইত্যাদি।”
আরও পড়ুন: বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অভিযোগে ঐশী ঘোষকে শো-কজ জেএনইইউ-র
তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, গত একবছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে উদ্যোগী কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে কোভিড কেয়ার খোলা, পড়ুয়াদের ভ্যাকসিনেসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও কোভিড কেয়ার সেন্টার খোলা হয়নি। টিকাকরণের ব্যবস্থাও করা হয়নি। পাশাপাশি, ঐশীর সংযুক্তি, করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু সে সুযোগ সব পড়ুয়া পাচ্ছেন না। এ নিয়ে যখন প্রতিবাদের আবহ তৈরি হচ্ছে, ঠিক তখনই পড়ুয়াদের ভয় দেখানোর জন্য এ ধরনের শো-কজ নোটিস জারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।