কলকাতা: লোকসভা ভোটের আবহে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সবথেকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে শাসকদলকে। সৌজন্যে দলেরই একাধিক নেতা। এমনকী তাঁর জয়ের সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তবে তাপস রায়কে হারিয়ে কলকাতা উত্তরে আবারও সাংসদ হয়েছেন সুদীপই। আর তাঁর এই জয়ের পরই শনিবার তাঁকেই তৃণমূলের দলনেতা হিসাবে বেছে নিয়েছে দল।
এদিন কালীঘাটে সদ্য নির্বাচিত সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি ঘোষণা করেন, “তৃণমূলের পার্লামেন্টারি পার্টির চেয়ারপার্সন হিসাবে আমাকে মনোনীত করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।” এরপরই একে একে জানান, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ই এবারও লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা। মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি লিডার কাকলি ঘোষদস্তিদার। অন্যদিকে রাজ্যসভায় দলনেতা হিসাবে ডেরেক ও’ব্রায়েন, ডেপুটি লিডার সাগরিকা ঘোষের নাম ঘোষণা করা হয়। মুখ্য সচেতক মনোনীত করা হয় নাদিমুল হককে। এর আগে এই দায়িত্বে ছিলেন সুখেন্দুশেখর রায়।
লোকসভা ভোটে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের আঁচ সবথেকে বেশি যে কেন্দ্র থেকে এসেছে, তা কলকাতা উত্তর। এই কেন্দ্রে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করাকে কেন্দ্র করে কী হয়নি! তাপস রায়ের মতো দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে পর্যন্ত চলে গিয়েছেন। দলের আরেক নেতা কুণাল ঘোষ প্রকাশ্যে সুদীপের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। সুদীপ-বিরোধিতা শোনা গিয়েছে একাধিক কাউন্সিলরের কাছ থেকেও। কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে লিড পেয়েছেন তাপস রায়। কলকাতা উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের ওয়ার্ড থেকে আশানুরূপ মার্জিন দিতে না পারায় কলকাতার এক কাউন্সিলর তো ইস্তফাও দিতে চান।
আরও একবার লোকসভায় সেই সুদীপকেই তৃণমূলের দলনেতা হিসাবে দেখা যাবে। নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ নিয়ে নানা আলোচনাও চলছিল। আদৌ তাঁকে এবারও এই পদে বসানো হবে কি না, উঠছিল সেই প্রশ্ন। তবে সমস্ত জল্পনাকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিয়ে এদিন দলনেত্রী জানিয়ে দিলেন সুদীপেই ভরসা দলের।