কলকাতা: বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। আর এবারের লোকসভা ভোটে বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভাও। বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনেই ভোটে লড়তে চায় তারা। ইতিমধ্যেই আঞ্চলিক কমিটিও গঠন করে ফেলেছে। ভোট ময়দানে নিজেদের শক্তি পরখ করতে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার অন্যতম অস্ত্র কি হতে চলেছে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক? বাংলার ভোট রাজনীতিতে অন্যতম বড় ফ্যাক্টর মতুয়া ভোট। যুযুধান দুই পক্ষ তৃণমূল ও বিজেপি উভয় শিবিরেরই বাড়তি নজর থাকে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির ভোটব্যাঙ্কের দিকে। সবুজ-গেরুয়া দু’পক্ষের জন্যই সমর্থন ভাগাভাগি রয়েছে এখানে। একদিকে শান্তনু ঠাকুর। যিনি মোদী সরকারের প্রতিমন্ত্রী। আবার অন্যদিকে মমতা বালা ঠাকুররা, যাঁরা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ। এবার সেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে নজর অখিল ভারত হিন্দু মহাসভারও।
সম্প্রতি সংগঠনের রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রতিনিধিদল গিয়েছিল ঠাকুরবাড়িতে। এনআরসির বিরোধিতায় সুর চড়িয়ে মতুয়াদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল চন্দ্রচূড় গোস্বামীদের। এনআরসিকে ‘কালা কানুন’ বলেও কেন্দ্রকে বিঁধতে ছাড়লেন না। ঠাকুরবাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমরা কোনওভাবেই চাই না, মতুয়াদের এনআরসির লাইনে দাঁড়াতে হোক। এই ভারতবর্ষের মাটি আমাদের সবার। যাঁরা দেশভাগের বলি হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে কেন এনআরসির লাইনে দাঁড়াতে হবে? এই কালা কানুনের বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন।” লোকসভা ভোটের মুখে মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে সুর চড়ালেন তাঁরা।
বুধবারও এক বিবৃতিতে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সম্পাদক চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানান, “কোনও মূল্যেই NRC আইনকে অন্যায় ভাবে প্রয়োগ করে সনাতনী মানুষদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে দেব না।”
প্রসঙ্গত, রাজ্য সঙ্গীত ও পশ্চিমবঙ্গ দিবস সংক্রান্ত বিষয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সর্বদল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী। সেখানে চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে কথা বলে বেশ খুশি হয়েছিলেন মমতা। চন্দ্রচূড়ও তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাংলার স্বার্থে রাজ্য সরকারের পাশে থাকবেন তাঁরা। একশো দিনের কাজের বকেয়ার দাবিতে রাজভবনের বাইরে ধরনা মঞ্চেও পৌঁছে গিয়েছিলেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রতিনিধিরা।
অতীতে আবার চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বিজেপির সঙ্গেও বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল। বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এমনকী ২০২১ সালে ভবানীপুরে বিধানসভা উপনির্বাচনেও প্রার্থী ছিলেন তিনি।