কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডের পর বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠেছে। সরব হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এবার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি-তে উঠল থ্রেট কালচারের অভিযোগ। আর সেই অভিযোগ ঘিরে সরগরম সিইএসসি-র একাধিক অফিস। মঙ্গলবার ধর্মতলায় সিইএসসি-র প্রধান কার্যালয়-সহ একাধিক অফিসে গিয়ে ফিরতে হল গ্রাহকদের। বলা হয়, সার্ভার কাজ করছে না। তবে জানা গিয়েছে, সিইএসসি-র বিভিন্ন অফিসে কর্মীদের একাংশ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত সিইএসসির এক মহিলা কর্মীর অভিযোগ ঘিরে। ওই মহিলা কর্মী অভিযোগ করেন, তিনি বদলির আবেদন করেছিলেন। সেই বদলির জন্য তাঁর কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়। তিনি এর বিরুদ্ধে সরব হলে তাঁকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। ওই মহিলা বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানালে তিনি বাড়ির কাছে পোস্টিং পান। গতকাল নতুন অফিসে যোগ দিতে চান তিনি। অভিযোগ, তখন সেখানকার তৃণমূল সমর্থিত কর্মীরা তাঁকে বাধা দেন। ওই মহিলা উল্টোডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু, FIR নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তিনি জিডি করেন। এবং অনলাইনে সমস্ত ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। মূল অভিযোগ, সমীর পাঁজার বিরুদ্ধে। সমীর পাঁজা তৃণমূলের শ্রমিক নেতা।
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এক মিছিলে হেঁটেছিলেন ওই মহিলা। শুধু ওই মহিলা নন, শুভজিৎ দত্ত নামে আর এক কর্মী আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলে হেঁটেছিলেন। অভিযোগ, পরদিন অফিসে গেলে তাঁকে বলা হয়, আর অফিসে আসতে হবে না। রাত দখল, দিন দখল করুন। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানায়, ওই কর্মীকে অফিসে ঢুকতে দিতে হবে।
তৃণমূলের শ্রমিক নেতা সমীর পাঁজা অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি কাউকে থ্রেট দেইনি। উল্টে আমাকেই থ্রেট দেওয়া হয়েছে। ওই মহিলা আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।” কীভাবে তাঁকে ফাঁসানো হবে, এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তৃণমূলের শ্রমিক নেতা কিছু বলতে পারেননি। সমীর পাঁজার পাশে দাঁড়িয়ে ওই মহিলার বিরুদ্ধে সরব হন একাধিক মহিলা কর্মীও।
তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনে যুক্ত এক মহিলা কর্মী বলেন, ওই মহিলাকে যতক্ষণ রাখা হবে, তাঁরা কাজ করবেন না। কারণ, ওই মহিলার জন্য তাঁরা অসুরক্ষিত অনুভব করছেন। তাহলে তাঁরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করছেন না কেন? প্রশ্ন শুনে ওই কর্মী বলেন, “ওই মহিলার যাতে চাকরি না চলে যায়, তাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।”
এদিন, ধর্মতলায় সিইএসসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে তৃণমূল সমর্থক সিইএসসি-র কর্মীরা জোড়ো হন। একাধিক অফিসে কর্মবিরতির জেরে সমস্যায় পড়েন গ্রাহকরা। গ্রাহকদের বলা হয়, সার্ভার ডাউন। তাই কাজ হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে কিছু বলতে চায়নি। পরিষেবা না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে যেতে হয় গ্রাহকদের।
সিইএসসি-তে থ্রেট কালচারের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এখন সব কিছুই থ্রেট কালচার বলে চালিয়ে দিচ্ছে। দিলীপ ঘোষকে নিজ কেন্দ্রে টিকিট দিল না বিজেপি। এটাও থ্রেট কালচার।”