Ambikesh Mahapatra: স্পর্শ করা গেল না অম্বিকেশাগ্র, একনজরে হয়রানির হলফনামা

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jan 20, 2023 | 7:53 PM

Ambikesh Mahapatra timeline: কার্টুন কাণ্ডের প্রায় ১১ বছর পর, শুক্রবার এই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্য়াপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। দেখে নেওয়া যাক তাঁর এই ১১ বছরের লড়াইয়ের উত্থান-পতন।

Ambikesh Mahapatra: স্পর্শ করা গেল না অম্বিকেশাগ্র, একনজরে হয়রানির হলফনামা
অম্বিকেশ মহাপাত্র

Follow Us

কলকাতা: কার্টুন কাণ্ডের প্রায় ১১ বছর পর, শুক্রবার এই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্য়াপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মকুল রায় এবং দীনেশ ত্রিবেদীর ছবি সম্বলিত একটি ব্যঙ্গচিত্র শেয়ার করেছিলেন তিনি। নিছক মজার সেই ব্যঙ্গচিত্র শেয়ার করার জেরে তাঁর বিরুদ্ধে রাতারাতি দায়ের করা হয়েছিল মামলা, গ্রেফতারও হতে হয়। তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৬-এর ক ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, ২০২১ সালে সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন তিনি। এটিই ছিল তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মূল অভিযোগ। তারপরও তাঁর আইনি লড়াই শেষ হয়নি। নতুন করে ভারতীয় দণ্ডবিধির দুটি ধারা প্রয়োগ করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অবশেষে সরকারের বিরুদ্ধে অম্বিকেশ মহাপাত্রের সেই একক লড়াই শেষ হল। দেখে নেওয়া যাক তাঁর এই ১১ বছরের লড়াইয়ের উত্থান-পতন –

কার্টুন কাণ্ড

২০১২ সালে, নিউ গড়িয়া ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের এক সদস্যকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, মুকুল রায় এবং দীনেশ ত্রিবেদীর কার্টুনটি ই-মেইল করেছিলেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। ১২ এপ্রিল পূর্ব যাদবপুর থানায় তাঁর নামে এফআইআর দায়ের করেছিলেন অমিত সর্দার নামে তৃণমূল কংগ্রেসের এক কর্মী। দীনেশ ত্রিবেদীকে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে সেই পদে মুকুল রায়কে বসানো নিয়ে, সত্যজিৎ রায় পরিচালিত সোনার কেল্লা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় সংলাপ ‘দুষ্টু লোক ভ্যানিশ’ ব্যবহার করে ওই ব্যঙ্গচিত্রটি তৈরি করা হয়েছিল।

গ্রেফতার অম্বিকেশ

সেই রাতেই অম্বিকেশ মহাপাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ লকআপে রাখা হয়েছিল। পরদিন আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০৯ এবং ১১৪ ধারা এবং তথ্য়-প্রযুক্তি আইনের ৬৬-র ক ধারায় মামলা করা হয়েছিল। তবে জুলাই মাসে চার্জশিট পেশ করার সময়, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র আইটি আইনের ৬৬-র ক ধারা উল্লেখ করেছিল। এই ধারায় কম্পিউটার বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করে অবমাননাকর তথ্য শেয়ার করা তা অপরাধ বলে গণ্য করা হত।

মানবাধিকার কমিশন

অম্বিকেশ মহাপাত্রকে যে পুলিশ কর্তারা গ্রেফতার করেছিলেন, ২০১২ সালের অগস্টে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। মামলা লড়ার আইনি খরচের জন্য কলকাতা হাইকোর্টও ৭৫,০০০ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও দেয়নি সরকার।

বাতিল ৬৬-র ক, হাল ছাড়ল না রাজ্য

২০১৫ সালের মার্চে, এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে আইটি আইনের ৬৬-র ক ধারা বাতিল করছিল সুপ্রিম কোর্ট। অম্বিকেশ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটিও বাতিল এবং অকার্যকর হয়ে যেতে পারে অনুধাবন করে, রাজ্য সরকার অম্বিকেশ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা এবং ৫০০ ধারা যুক্ত করেছিল। প্রথমটি মহিলাদের সম্মানহানির বিষয়ে, দ্বিতীয় ধারাটি মানহানির।

‘আমরা আক্রান্ত’

২০১৫ সালে ‘আমরা আক্রান্ত’ নামে একটি ফোরামও তৈরি করেছিলেন অম্বিকেশ। টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়াল, শিলাদিত্য চৌধুরীদের মতো রাজ্যে সরকারি আক্রমণের শিকার হওয়া অন্তত ১০০ জন এই ফোরামে যোগ দেন। রাজ্যের গণতান্ত্রিক লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই ফোরাম কাজ করে বলে দাবি অম্বিকেশের।

নির্বাচনে অম্বিকেশ

২০১৬ সালে বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। তবে জিততে পারেননি।

৬৬-র ক ধারা থেকে অব্যাহতি

২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর, আলিপুর কোর্টে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৬-র ক ধারা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল অম্বিকেশ মহাপাত্রকে। এরপর, অম্বিকেশ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০ এবং ৫০৯ ধারায় মামলা জারি রেখেছিল সরকার। তবে, এদিন সেই আইনি জটিলতা থেকেও মুক্তি পেলেন অম্বিকেশ।

Next Article