কলকাতা : গরু পাচারের অভিযোগ উঠেছে আগেও। তবে এবার সেই মামলায় কান-মাথা সবাইকেই ধরতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রথমে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন এনামুল হক। এরপর মাস দুয়েক আগে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গরু পাচার সংক্রান্ত বিভিন্ন সূত্রের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এবার সেই মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। সিবিআই সূত্রে খবর, এনামুুল আর সায়গলের বয়ান মিলে গিয়েছে। অনুব্রতর সঙ্গে যে টাকা সংক্রান্ত ‘ডিল’ হত, সেই তথ্য এসেছে সিবিআই-এর হাতে।
গতস ফেব্রুয়ারি মাসে গরু পাচার মামলায় এনামুুল হককে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ইডি হেফাজত শেষ হওয়ার পর বর্তমানে তিহার জেলে রয়েছেন এনামুল। বর্তমানে জেলে রয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলও। তাঁদের জেরা করে যে সব তথ্য উঠে এসেছে তা চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ থেকে চলছিল গরু পাচার সংক্রান্ত ডিল। ওই সময় থেকেই পাচারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন এনামুল। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এনামুল হকের সঙ্গেই চুক্তি হত অনুব্রত মণ্ডলের। ফোনে কথা হত দুজনের। সিবিআই জেরায় এনামুল জানিয়েছে, পাচার করতে গেলে ‘প্রোটেকশন মানি’ দিতে হত তাঁকে। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, তিন মাসে ৬ কোটি টাকার ডিল হত। সায়গলকে টাকা দিতেন এনামুল। আর সায়গল টাকা দিতেন অনুব্রতকে। তার থেকে ভাগ পেতেন সায়গলও।
এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পাচারের টাকা সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হবে অনুব্রতকে। বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেফতার করার পর রাতে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে তৃণমূল নেতাকে। সিবিআই হেফাজতে নিজাম প্যালেসেই রয়েছেন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকে তাঁকে জেরা করা হবে বলে সূত্রের খবর। গরু পাচারের টাকা কোথায় যেত, কারা পেতেন সেই টাকা? গোয়েন্দাদের প্রশ্নপত্রে এ সব থাকবে বলেই জানা যাচ্ছে। এত দিন ধরে ৯ বার তলব করা হলেও মাত্র একবার হাজিরা দিয়েছিলেন অনুব্রত। এবার হেফাজতে নিয়ে অনুব্রতকে জেরা করে পাচার মামলার শিকড় খোঁজার চেষ্টা করবে সিবিআই।