কলকাতা : গোসা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। গত ১৬ অগস্ট TV9 বাংলার বুম ঠেলে সরিয়ে দিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। আর ৪৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকালে ফের একই মেজাজে দেখা গেল বীরভূমের বাহুবলী নেতাকে। মেয়ের চাকরির বিষয়ে প্রশ্ন করতেই বেজায় চটলেন অনুব্রত। TV9 বাংলার সাংবাদিককে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ‘হরিদাস পাল’ বলে সম্বোধন করলেন তিনি।
বীরভূম থেকে যে দিন গ্রেফতার করে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল, সে দিন গাড়ির মধ্যে কিছুটা বিপর্যস্ত দেখাচ্ছিল কেষ্টকে। কিন্তু ১৬ অগস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে নিয়ে যাওয়ার সময় অনুব্রত যে ভাবে উত্তর দিয়েছিলেন, তাতেই বোঝা গিয়েছিল মেজাজে তেমন কোনও ফারাক হয়নি অনুব্রতর। আর বৃহস্পতিবারও সেই একই ছবি।
এ দিন সকালেও কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজাম প্যালেস থেকে বের করা হয় দাপুটে নেতা অনুব্রতকে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর দিকে এগিয়ে যায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বুম। TV9 বাংলার সাংবাদিক তাঁকে বলেন, ‘আপনার মেয়ে টেট পাশ না করে চাকরি পেয়েছে?’, জবাবে অনুব্রত বলেন ‘সেটা কোর্ট বুঝবে, আপনি কে হরিদাস পাল?’ একবার নয়, হরিদাস পাল পাল শব্দটা দুবার উচ্চারণ করেন অনুব্রত।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন এই তৃণমূল নেতা। গত ১৪ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় মঞ্চ থেকে প্রশ্ন ছোড়েন ‘কেষ্টকে কেন গ্রেফতার করলে? কেষ্ট কী করেছে?’ এরপরই অনুব্রতর আইনজীবী জানান, অনুব্রতর আত্মবিশ্বাস নাকি ফিরে এসেছে। গত কয়েক দিনে অনুব্রতর যে শরীরী ভাষা দেখা গেল, তা সেই আত্মবিশ্বাসের ঝলক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
গত ১৬ অগস্ট একই ভাবে নিজাম প্যালেসের সামনে যখন অনুব্রতকে TV9 বাংলার সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো আপনার পাশে রয়েছে, আপনি কিছু বলবেন?’, অনুব্রতর বলেছিলেন, ‘নাইনে কিছু বলব না।’ অর্থাৎ TV9 বাংলার সামনে মুখ খুলতে নারাজ তিনি। এরপর সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়, TV9 বাংলার আর এক প্রতিনিধি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘মেয়ের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে কিছু বলবেন?’ কয়েক মুহূর্তের মধ্যে বদলে গিয়েছিল চোখ-মুখ। বাঁ হাত দিয়ে চেপে ধরেছিলেন TV9 বাংলার বুম। আর বৃহস্পতিবারের ঘটনায় আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল ‘নাইনে’র ওপর রাগ যায়নি তাঁর।
এ প্রসঙ্গে বাম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, ‘অনুব্রতর এই মেজাজ চিড়িয়াখানার সিংহের, জঙ্গলের সিংহের আভিজাত্য নয়।’ বাম নেতার কথায়, ‘সাংবাদিক হরিদাস পাল নন ঠিকই, কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল যে কত বড় হরিদাস পাল সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। ওঁর মেয়ে টেট পরীক্ষায় ফেল করে চাকরি পেয়েছেন শুধু তাই নয়, হাজিরা খাতাটাও বাড়িতে আসত।’