কলকাতা : কোভিডের সময় ভিন্ন উপায়ে ময়নাতদন্তের পদ্ধতি বার করে তাকে লাগিয়ে দিয়েছিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ। এবার সেই কাজ স্বীকৃতি পেল বিশ্বের দরবারে। ময়নাতদন্তের সময় মৃতদেহ থেকে ড্রপলেট নির্গত হয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ছিল। মৃতদেহের ড্রপলেট থেকে যাতে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা না বেড়ে যায়, সে জন্য বিকল্প উপায়ে ময়নাতদন্তের পদ্ধতি বের করেছিলেন আর জি কর ফরেন্সিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান সোমনাথ দাস। তাঁর সেই কাজ গবেষণাপত্র হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে।
চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রথম সারির জার্নাল হিসাবে স্বীকৃত ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল। সেখানে এ রাজ্যের একটি মেডিক্যাল কলেজের এই স্বীকৃতি সারা বিশ্বের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানকে পথ দেখাবে বলে মনে করছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাব্যক্তিরা। বিশ্ব দরবারে এই স্বীকৃতির পর আর জি কর হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান সোমনাথ দাস জানিয়েছেন, “যে পদ্ধতিতে আমরা সাধারণভাবে ময়নাতদন্ত করি, সেই পদ্ধতির থেকে অন্যরকম একটি পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে। নতুন পদ্ধতির সবথেকে বড় সুবিধা হল, সাধারণভাবে ময়নাতদন্ত করার জন্য শরীরের যে পরিমাণ অংশ কাটাকাটি করতে হয়, তাতে ড্রপলেট ছড়ানোর সম্ভবনা বেশি থাকে। কিন্তু নতুন এই পদ্ধতিতে ড্রপলেট ছড়ানোর সম্ভবনা অনেকাংশে কম। প্রায় শূন্য।”
সাধারণভাবে, মৃতদেহের ময়নাতদন্তের সময় পাঁজরের অংশ কেটে ফুসফুস কিংবা অন্যান্য টিস্যুগুলি বের করা হয়। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে এইভাবে পাঁজর কাটার দরকার পড়ে না। তলপেটের ভিতর থেকেই ফুসফুস বা অন্যান্য টিস্যুগুলিকে বের করে আনা সম্ভব নতুন পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতিতে কোভিড বা অন্য কোনও ধরনের অজানা রোগে মৃতদেহের থেকে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা অনেকটা কমাবে বলেই মত তাঁর। উল্লেখ্য, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ল্যান্সেটের পরই অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি ম্যাগাজিন হল ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল। ফলে এই জার্নালে কোনও লেখা প্রকাশিত হওয়ার অর্থ, তা বিশ্বের দরবারে আলাদা গুরুত্ব পায়। এমনই মত চিকিৎসক মহলের।