কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই তদন্তকারীদের জালে ধরা পড়ছে একের পর এক রাঘব বোয়াল। এরইমধ্যে, বিগত কয়েকদিন ধরে সব চর্চাকে পিছনে ফেলে স্পটলাইটের নীচে একটাই নাম বিভাস অধিকারী। গতকালই তাঁর ডেরায় যেতেই হামলা হয়েছিল টিভি-৯ বাংলার প্রতিনিধিরে উপর। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে শেষ যে নামটি উঠে এসেছে, সেটি বিভাস অধিকারীর। সোমবার সেই বিভাসের এলাকা বীরভূমের নলহাটিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিরা। তাঁদের হাতের কাছে পেয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে বিভাসের শাগরেদরা। নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় তাঁর দুই ছেলেকে। এবার এ ঘটনা নিয়ে প্রথম মুখ খুলতে দেখা গেল বিভাসকে। টিভি-৯ বাংলার প্রতিনিধিদের যে চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছিল তা এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর নিজের ছেলেদের আড়াল করে দোষ ঠেললেন গ্রামবাসীদের দিকে। এমনকী এও দাবি করলেন, তাঁর ছেলেরাই সোমবার মারমুখী জনতার হাত থেকে দুই সাংবাদিককে উদ্ধার করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত চাইলেন ক্ষমা।
এদিকে মঙ্গলবার বিভাসকে তলব করেছিল ইডি। তল্লাশি চলে তাঁর কার্তিক বোস স্ট্রিটের ফ্ল্যাটটিতে। তারপরই এ নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায় তাঁকে। এদিন টিভি-৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ ঠিক হয়নি। যদি আমাকে বলা হয় ক্ষমা চেয়ে নিতে। আমি ক্ষমা চেয়ে নেব। আমার ছেলেরা যদি মেরে থাকে তাহলে আমি ওদের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। গোটা গ্রামের কেউ যদি কোনও দুর্ব্যবহার করে থাকে সকলের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।” যদিও তাঁর স্পষ্ট দাবি যে সময় এ ঘটনা ঘটে সেই সময় এলাকায় ছিলেন না তিনি। গিয়েছিলেন বহরমপুরে। তাঁর এও দাবি, তিনি শুনেছেন সাংবাদিকরা তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মার কাছে গিয়ে তাঁর সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করছিলেন। তা দেখেই মাথা ঠিক রাখতে পারেনি আশ্রমের ভক্তকুল। মাথা গরম করে ফেলে গ্রামবাসীরাও। তিনি বলেন, “ওই সময় আমি ছিলাম না। বহরমপুর গিয়েছিলাম। আমার বাবার বয়স ৮৮ বছর। আমার মায়ের কাছে গিয়ে উল্টোপাল্টা প্রশ্ন করা হয়। এগুলো গ্রামের লোক, হাজার হাজার শিষ্য তাঁরা তো বরদাস্ত করবে না।”
এদিকে মঙ্গলবার বিভাসকে তলব করেছিল ইডি। তল্লাশি চলে তাঁর কার্তিক বোস স্ট্রিটের ফ্ল্যাটটিতে। তারপরই এ নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায় তাঁকে। সোমবার টিভি-৯ বাংলার রিপোর্টার সুজয় পাল ও ক্যামেরাপার্সন রজত শিকদারকে মারধরের ঘটনায় তীব্র শোরগোল চলছে রাজনৈতিক মহলে। ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা। শুধু সাংবাদিকদের মারধরই করা হয়নি তাঁদের ক্যামেরাও ভেঙে দেওয়া হয়। বাধ্য করা হয় ফেসবুক লাইভ করে মিথ্যা বয়ান দিতে। এ ঘটনার পর ফের প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল বাংলার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও। মারধরের ঘটনায় বিভাস অধিকারীর দুই ছেলে অর্ঘ্য ও সায়নের নামে ইতিমধ্যে দায়ের হয়েছে এফআইআর।