কলকাতা: শহর জুড়ে উৎসবের আমেজ। সন্ধ্যা নামলেই কালো মাথার ভিড় চোখে পড়ছে কলকাতার রাজপথে। কিন্তু সকালে বা দুপুরে রাস্তায় নামলেই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। অটোর সিট যেন তোলা হচ্ছে নিলামে, কে কত বেশি ভাড়া নিতে পারে! এই নিয়ে যাত্রীরা নিত্যদিন অটোচালকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেও সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর তাগিদে বেশি ভাড়া দিতে একপ্রকার বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা, সর্বত্রই একই ছবি। বিধাননগর থেকে বেহালা, মহালয়ার আগে থেকেই বেশি ভাড়া নেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়ে গিয়েছে সেই মহালয়া থেকে। ১০ টাকার রুটে অটো ভাড়া এখন কোথাও ২০, কোথাও ৩০।
যাত্রীরা বলছেন, অটোতে ওঠার আগে চালকরা বলে দিচ্ছেন বাড়তি টাকা লাগবে। কোথাও আবার যাত্রীদের সঙ্গে দর হাঁকাহাঁকিও করতে দেখা যাচ্ছে অটোচালকদের। যে যাত্রী বেশি টাকা দিতে পারছেন, তাঁদেরই অটোতে ওঠার অগ্রাধিকার। স্কুল বা অফিসে যাওয়ার জন্য তাই ২ থেকে ৩ গুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এক মহিলা যাত্রী বলেন, ‘অটোতে বসলেই বলে দেওয়া হচ্ছে, এত ভাড়া লাগবে। যেতে হলে যান, নাহলে নেমে যান। যেন বিভীষিকা তৈরি হয়েছে।’
অটো চালকদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, পুজোর সময় কলকাতা পুলিশ তাঁদের বিকেল ৪ টে-র পর থেকে অটো চালাতে দিচ্ছে না। ফলে পুজোর দিনগুলিতে যথেষ্ট টাকা রোজগার করতে পারছেন না তাঁরা। অটো চালকরা আরও বলছেন, মালিকের দিয়ে, জ্বালানি ভরার পর তাঁদের হাতে প্রায় কিছুই থাকে না। আর পুজোর সময় দিনের বেলা যাত্রী পাওয়া কঠিন। সন্ধ্যাবেলাতেই রোজগার করার সুযোগ থাকে। পুলিশের নির্দেশে সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এক অটোচালক আরও বলেন, “অনেক যাত্রীই আমাদের বলেন, বেশি টাকা দেব, নিয়ে চলুন। তখন আমরা সেই যাত্রীদের নিয়ে যাই আগে।” তবে ভাড়া বেশি দেওয়ার ক্ষেত্রে জোরজুলুম নেই, আবেদন করা হয় বলেই দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বর্ধিত ভাড়াকে বখশিস বলেই দাবি করছেন অটো চালকরা।