বীরভূম: বগটুইকাণ্ডে আনারুলের বিরুদ্ধে আরও কড়া সিবিআই। গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড আনারুলের বিরুদ্ধে এই মামলায় নতুন ধারা যুক্ত করার আবেদন করেছে সিবিআই। রামপুরহাট আদালতে আবেদন করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৯ ধারা যুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে,কোনও অপরাধ সংঘঠিত করার ক্ষেত্রে উস্কানি দেওয়া। বগটুই কাণ্ডে আনারুলের উস্কানিতেই ভাদু শেখের অনুগামীরা প্রতিশোধ নিয়েছিল। তাই শুধুমাত্র আনারুলের বিরুদ্ধেই এই ধারা যোগ করার আবেদন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চার্জশিটেই সিবিআই উল্লেখ করেছে, ‘আনারুলই গণহত্যার কারিগর।’ সিবিআই-এর বক্তব্য, ভাদু শেখ খুনের পর আনারুলই রামপুরহাট হাসপাতালে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে উস্কে দিয়েছিল। সেই উস্কানির পরেই বোমা-লাঠি, পেট্রোল নিয়ে গ্রামের দিকে যায় উন্মত্ত জনতা। চলে ভাঙচুর, আগুন লাগানো।
সিবিআই চার্জশিটে এও উল্লেখ করেছেন, গ্রামে যখন একের পর এক বাড়িতে আগুন জালানো হচ্ছে, বোমা মারছে তখন বগটুই গ্রাম থেকে একজন গ্রামবাসী আনারুলকে ফোন করেছিলেন। আনারুল তখন ফোনে জানায়, “আমরা ভাদু শেখ খুনের প্রতিশোধ নিচ্ছি। ওরা মেরেছে। কিছু করতে হবে না। পুলিশও যাবে না।”
সিবিআই এর চার্জশিটে দমকল ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সিবিআই-এর হাতে তথ্য এসেছে, রামপুরহাট থানার সাব ইন্সপেক্টর রমেশ সাহাকে ২১ মার্চ রাতে সোনা শেখের বাড়ি থেকে একাধিকবার ফোন করা হয়েছিল। একবার ফোন ধরেন রমেশ। ২৩ সেকেন্ড কথা হয়। সিবিআই চার্জশিটে এটাও উল্লেখ করেছে, ফোন পেয়ে দমকল রাতে এসেছিল। কিন্তু আগুন না নিভিয়ে সাড়ে বারোটার সময়ে চলে যায়। পরদিন ভোরে আসে।
২১ মার্চ সন্ধ্যায় বীরভূমের রামপুরহাটের ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখকে। তার দেড় ঘণ্টা পর থেকেই গ্রামে শুরু হয় তাণ্ডব। রাতে একসঙ্গে একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ির সদস্যদের কুপিয়ে খুন করা হয়। সেই গণহত্যা রীতিমতো তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই গ্রেফতার করা হয় মূল চক্রী আনারুলকে। যদিও আনারুলের দাবি, তাঁকে প্রথম থেকেই ফাঁসানো হচ্ছে।