কলকাতা: বগটুই গণহত্যা এবং খুনের মামলায় ফের একবার আদালতে উল্লেখ করা হল বগটুই-এর পরিস্থিতি। মামলাকারীর আইনজীবীদের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও বগটুই-এর আক্রান্তদের পরিবার গ্রামে ফিরতে পারেনি। সোমবার আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানি। এ দিন সিবিআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, মামলার চার্জশিট জমা পড়েছে। গত ২১ মার্চ রাতে পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বীরভূমের বগটুই গ্রামের ১০টি বাড়িতে। ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পরই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলার শুনানি ছিল এ দিন। সব পক্ষের কথা শুনেছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। আপাতত রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে।
এ দিন সিবিআই-এর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য আদালতে জানিয়েছেন, তদন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে। ফাইল করা হয়েছে চার্জশিট। অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন ১৬ জন। বগটুই হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল, সেই মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আর্জি এ দিন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এক নাবালক জড়িত রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে। এখনই ওই নাবালক যাতে জামিন না পান তা যাতে নিশ্চিত করা হয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
অন্য এক মামলাকারীর আইনজীবীর সওয়াল, এখনও ক্ষতিগ্রস্তরা গ্রাম ছাড়া রয়েছেন। বাসস্থানে ফিরতে পারছেন না। তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যাপারে এবং শান্তিপূর্ণ বসবাসের জন্য যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, ঘটনার পর বগটুই গ্রামের অনেকেই বাড়ি ছাড়া হন। আতঙ্কে পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। কারও কারও বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ায়, তাঁরা আর ফিরতে পারেননি।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, ওই ঘটনায় অনেকগুলি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাড়িগুলি তৈরি বা সারাই করে গ্রামবাসীদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অনেকে বাড়িও ফিরেছেন। সেই ভিডিয়োগ্রাফি রয়েছে। এখনও কয়েক জন গ্রামের বাইরে রয়েছেন। তাঁদের বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলেই ফিরিয়ে আনা হবে।
বীরভূমের রামপুরহাটের ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখকে। ওই ঘটনার পর থেকেই গ্রামে শুরু হয় তাণ্ডব। ওই রাতেই বগটুই গ্রামে ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পর দিন সকালে আটজনের পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয়। কয়েক দিন পর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়।