বরাহনগর: শনিবার রাজ্যের ৯ লোকসভা কেন্দ্রের সঙ্গে উপনির্বাচন রয়েছে বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা যিনি বর্তমানে বিজেপির, সেই তাপস রায়। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দলবদল করেন তাপস। ১ জুন সেই কেন্দ্রেই আরও একবার বিধায়ক নির্বাচনের উপভোট।
বরাহনগর কেন্দ্রটি একটা সময় লাল দুর্গ হিসাবেই পরিচিত ছিল। প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ছিলেন এই কেন্দ্রের ছ’বারের বিধায়ক। পরে আরএসপি এখানে তাদের কেতন ওড়াতে শুরু করে। ১৯৭৭ থেকে ২০০৬, শুধুই ‘কোদাল বেলচা’র জয়জয়কার।
২০১১ সালে যখন রাজ্যে পালাবদল হচ্ছে, অন্যান্য একাধিক বিধানসভার এলাকার মতোই বরাহনগরেও ভাঙল বামেদের গড়। স্বাধীনতার পর প্রথম কোনও ‘অ-বাম’ বিধায়ক দেখল বরাহনগর। তাপস রায়ের হাত ধরে ফুটল ঘাসফুল। ২০১৬, ২০২১-এ সেই জয় অব্যাহত রাখেন তাপস। তবে এই লোকসভা ভোটের আগে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল থেকে বেরিয়ে যান। বিজেপিতে যোগও দিয়ে দেন রাতারাতি। বিজেপি তাঁকে দেয় সুদীপের কলকাতা উত্তরেরই টিকিট।
আর বিধায়ক শূন্য বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রথম চমক দেয় বিজেপি। কলকাতার কাউন্সিলর সজল ঘোষকে প্রার্থী করা হয় তাপসের কেন্দ্রে। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী করেছে তারকানেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা সায়ন্তিকার থাকলেও জেতার অভিজ্ঞতা এখনও হয়নি। তবে ভোট প্রচারে কোনও খামতি রাখেননি। কলকাতা, দমদম যখন ৪২-৪৩ ডিগ্রির পারদ ছুঁয়ে তাপপ্রবাহে নাকাল, সায়ন্তিকা দিনেদুপুরেও দাপিয়ে প্রচার করেছেন। সেই প্রচারই তাঁর ইউএসপি হিসাবে কাজ করে কি না সেটারই পরীক্ষা শনিবার।
তবে সজলও পোড় খাওয়া রাজনীতিক। বরাহনগরে লড়ার জন্য যা কিছু প্রয়োজনীয় সমর্থন, তা তাপস রায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন। তাপস কলকাতা উত্তরের প্রার্থী হলেও সজলের হয়ে প্রচার করে গিয়েছেন। তবে সূত্রের খবর, প্রথম দিকে সায়ন্তিকাকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও, তৃণমূল সুপ্রিমো ও দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের নির্দেশে সেসব কাটিয়ে শেষবেলায় দলের সকলে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তারকা-প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে। তৃণমূল ও বিজেপি যখন প্রচারের সমস্ত আলোক নিজেদের দিকে টেনেছে, সিপিএমের তন্ময় ভট্টাচার্যও কিন্তু পিছিয়ে থাকেননি। জোর কদমে ময়দানে ভোটপ্রার্থনা করেছেন। অর্থাৎ এবার ত্রিমুখী লড়াই বরাহনগরে।