কলকাতা: শেষ দফায় কলকাতার ভোট। সঙ্গে ডায়মন্ড হারবার, বসিরহাট, দমদমের মতো কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। শনিবার সপ্তম দফা তথা শেষ দফার লোকসভা ভোট। এ রাজ্যের মোট নয় কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। তালিকায় আছে কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, দমদম, বারাসত, বসিরহাট, ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর, মথুরাপুর, যাদবপুর। জোর লড়াই প্রতিটি কেন্দ্রে।
এ দফায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আসনের মধ্যে শীর্ষে ডায়মন্ড হারবার। এ কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৪ থেকে এই কেন্দ্র থেকে লড়ছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। এবার হ্যাটট্রিকের লড়াইয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বিপরীতে বিজেপি দাঁড় করিয়ে তাদের ববিকে। যাঁর পোশাকি নাম অভিজিৎ দাস। প্রথম দিন থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এই কেন্দ্র নিয়ে নানা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। শুভেন্দু বলেছিলেন, এই কেন্দ্রে যেভাবেই হোক জয় বিজেপি আনবেই। দেখা যাক প্রেস্টিজ ফাইটটা জেতেন কে?
এরপরই বসিরহাটের নাম। সন্দেশখালি এই কেন্দ্রকে এবার আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি শেখ নুরুল ইসলামকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। হাজি নুরুল এক সময়ে এ কেন্দ্রের সাংসদও ছিলেন। বিজেপির চমক সন্দেশখালির প্রতিবাদী মহিলা রেখা পাত্র। আবার সিপিএমও এখানে ভালই দান দিয়েছে, প্রার্থী করেছে প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে। সন্দেশখালি আবহে যিনি রীতিমতো লাইমলাইটে উঠে আসেন।
কলকাতা উত্তরেও এবার লড়াই জমজমাট। বিদায়ী সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ঘাসফুল ছেড়ে ভোটের মুখে দলবদল করা তাপস রায় বিজেপির প্রার্থী। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য। তবে সকলে বলছেন, লড়াইটা ভোটের আগেও তাপস-সুদীপের ছিল, ভোটের ময়দানেও তাঁরাই যুযুধান।
কলকাতা দক্ষিণ আবার তৃণমূলের পুরনো গড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে এখানে ঘাসফুলের রমরমা হয়েছিল। এরপর সুব্রত বক্সী, মালা রায়। এবারও মালা রায়কেই প্রার্থী করা হয়েছে। এখানে আবার বিজেপির প্রার্থী রায়গঞ্জের বিদায়ী সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। সিপিএম প্রার্থী করেছে সায়রা শাহ হালিমকে।
দমদমে তিনবারের সাংসদ থেকেছেন সৌগত রায়। তৃণমূলের এবারেরও প্রার্থী তিনি। বিজেপির প্রার্থী এক সময় তৃণমূলে থাকা শীলভদ্র দত্ত। চমক দিয়েছে বামেরা। সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীকে এবার প্রার্থী করা হয়েছে এখানে। অনেকে বলছেন, এ কেন্দ্রে এবার ‘3S’-এর লড়াই। দেখা যাক দমদমের কোন S-এ কত দম?
যাদবপুরে এবার বড় টক্কর। সিপিএমের সৃজন ভট্টাচার্য আর তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষের লড়াই প্রচারপর্ব থেকেই জমজমাট। ভোটের ময়দানে কে বাজিমাত করে সেটাই দেখার। বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে। এখানে প্রার্থী আছে আইএসএফ-এরও। নাম নুর আলম খান।
বারাসতে ২০০৯ সাল থেকে সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। ২০১৯ অবধি জয় ধরে রাখা কাকলি এবারও তৃণমূলের প্রার্থী। বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বপন মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী করেছে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে।
মথুরাপুরে বিদায়ী সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়ার জায়গায় বাপি হালদারকে এবার টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অশোক পুরকাইত। সিপিএম প্রার্থী শরৎচন্দ্র হালদার।
জয়নগর এক সময় আরএসপির দুর্গ বলে পরিচিত ছিল। গত কয়েক বছরে সে সব হারিয়েছে। ২০১৪ সালে প্রতিমা মণ্ডল সাংসদ হন। তৃণমূলের সেই জয়যাত্রা ২০১৯-এও অব্যাহত রেখেছেন তিনি। এবারও তৃণমূলের ভরসা প্রতিমাতেই। বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অশোক কাণ্ডারী। এই কেন্দ্রে আরএসপির প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ মণ্ডল।