কলকাতা: ‘সোনাই নেই…’ এ কথা হয়তো চিকিৎসক-লোকমুখে শুনে বুঝেই গিয়েছেন সৌরনীলের বাবা সরোজ সরকার। কিন্তু তিনি মন থেকে বিষয়টি মেনে নেননি। বিশ্বাসও করতে চাইছেন না। তাই যখন থেকে সংজ্ঞা ফিরেছে, নিজের ঘোরেই রয়েছেন তিনি। কখনও বলে চলেছেন, ‘সোনাই দুষ্টুমি করিস না’, কখনও আবার নিজের খেয়ালে খুনসুটি করে চলেছেন। তিনি স্বাভাবিক নেই, স্থিতিশীলও নয়, সেটাই বলছেন চিকিৎসকরা। এসএসকেএম-এ মঙ্গলবার সৌরনীলের বাবার পায়ের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থা, এমনই তা এদিন করা সম্ভব হচ্ছে না। অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর অস্থিরতা কাটাতে শুরু হয়েছে কাউন্সেলিংয়ে। সরোজের রক্তে শর্করার মাত্রা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নয়। সৌরনীলের বাবার হাতে-পায়ে কম্পন রয়েছে। দুর্ঘটনায় সৌরনীলের বাবার দুটো পা ভেঙে গিয়েছে। বাঁ পায়ের হাঁটুর নীচের হাড় ভেঙেছে। তারই অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। তবে তিনি স্থিতিশীল হলেই অস্ত্রোপচার করা হবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
শুক্রবারের একটা দুর্ঘটনার ‘ট্রমা’ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছে না বাংলা। স্কুলের সামনেই বাবার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে সাত বছরের সৌরনীল সরকারের শরীরটা পিষে গিয়েছিল লরির চাকায়। একটা খুদের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা প্রশাসনকে। হুঁশ ফিরিয়েছে লালবাজারের। গোটা ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছে লালবাজার। কিন্তু সন্তান হারানোর পর সৌরনীলের মা এখনও বাকরুদ্ধ। কিছু বলার কিংবা বোঝার মতো পরিস্থিতিতে তিনি নেই।
শুক্রবার সন্তানের দেহ দাহ হয়েছে, হাসপাতালে কার্যত অস্বাভাবিক অবস্থায় তাঁর স্বামী। যিনি আসলে বুঝতেই পারছেন না, তাঁর সন্তান নেই। এখনও আপাতত চিকিৎসকরা সৌরনীলের বাবার সেই অস্থিরতাই কাটাতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সৌরনীলের পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছেন।