কলকাতা: ভূপতিনগর থানার ওসি আপাতত কোনও মামলার তদন্ত করতে পারবেন না। বিজেপি নেতা তপন মিদ্দার মামলার প্রেক্ষিতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভূপতিনগর থানার ওসি মামলা প্রস্তুত করতেও পারবে না। অন্য কোনও অফিসার তদন্ত করলেও আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও চার্জশিট জমা দিতে পারবে না। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবেন ওসি। পুলিশের কাছে একটি রিপোর্টও তলব করেছেন বিচারপতি। কোন কোন মামলায় বিস্ফোরণের অভিযোগ রয়েছে, আর সে সব ক্ষেত্রে NIA-কে কেন জানানো হয়নি? আগামী সোমবার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এদিন শুনানির সময়ে আদালত অবমাননাকর মন্তব্য করার জন্য ক্ষমা চান ওসি গোপাল পাঠক।
তপন মিদ্দা নামে ভূপতিনগরের স্থানীয় এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে গত তিন বছরে ২৬টি ফৌজদারি মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ১৫টি চার্জশিটও জমা করেছে পুলিশ। কিন্তু মামলাকারীর অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর-ই নেই। একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর একের পর এক মামলায় তাঁকে ‘সোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হয়। তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশের তরফ থেকে একটি রিপোর্ট পেশ জমা করা হয়। তাতে পুলিশের বক্তব্য, “আদালতের রক্ষাকবচের ফলে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে অভিযুক্তরা।”
পুলিশের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হন বিচারপতি। রাজ্যের আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, “তিনি পুলিশ অফিসার বলে তিনি যা খুশি তাই বলতে পারেন!” রাজ্যের তরফে বলা হয়, “আমি ক্ষমা প্রার্থী। যা লেখা হয়েছে, অন্যায়।” মামলাকারী তপন মিদ্দার আইনজীবী
রাজদীপ মজুমদার বলেন, “রাতে ওসি নিজে বিজেপি পার্টি অফিসে গিয়ে বিধায়কের সামনে হুমকি করে আসেন এক মামলাকারীকে।”
বিজেপি নেতারা ২১ জনের বিরুদ্ধে মোট ৪০ টা এফআইআর ছিল। মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, মোট ৪০ টি মামলা রয়েছে বলে রাজ্য রিপোর্ট দেয় মঙ্গলবার। সোমবারের রিপোর্টে ২৬ টি বলা হয়েছিল। অভিযোগ, এমন তদন্ত করছেন যেখানে ৩০৭ ধারায় মামলা শুরু করে চার্জশিট দেওয়ার সময় সেই ধারা বাদ দিয়েছে পুলিশ। মানে মারধরের কোনো রক্তপাত হয়নি। অথচ তার আগে গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, “বিরোধীদের হেনস্থা করার এটা একটা প্রক্রিয়া। এটা স্বচ্ছ তদন্ত নাকি?” মামলাকারীর তরফে বলা হয়, অন্তত ৩ টি মামলায় বিস্ফোরণের অভিযোগ আছে। কিন্তু সেখানেও আইন অনুযায়ী NIA কে জানানো হয়নি। বিচারপতি বলেন, “বেশি রকম স্বচ্ছ তদন্ত মনে হচ্ছে।”