কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় মামলাকারীদের পক্ষে সওয়াল করছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। নিয়োগ আটকে যাচ্ছে বলে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর এবার যে মামলায় শারীর শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার ক্ষেত্রে সুপার নিউমারিক পোস্টের নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিল আদালত, সেই মামলাতেও আইনজীবী হিসেবে ছিলেন বিকাশ রঞ্জন। চাকরি প্রার্থীদের একাংশ দাবি করছেন, সুপার নিউমারিক পোস্টে নিয়োগ হলে, চাকরি পেতেন আরও অনেকে। মামলার জন্য সেই নিয়োগ আটকে গেল বলে দাবি করছেন তাঁরা। কিন্তু এই প্রশ্নে বিকাশের স্পষ্ট দাবি, বেআইনিভাবে চাকরি পেলে সেই চাকরি পরে চলেও যেতে পারত।
TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে বিকাশ রঞ্জন জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। ২০১৯- এ সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়। আর ২০২২-এ অতিরিক্ত শূন্যপদ বা সুপার নিউমারিক পোস্টের কথা ঘোষণা করে রাজ্য। বলা হয়, ওয়েটিং লিস্ট প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার জন্য ওই পোস্ট তৈরি করা হয়েছে। বর্ষীয়ান বাম নেতার কথায়, ‘এটা আরও একটা দুর্নীতি।’
কেউ কেউ বলছেন, সরকারের ঘোষণা করা ওই পদ্ধতিতে অনেক দ্রুত চাকরি হতে পারত। কিন্তু বিকাশ রঞ্জনের প্রশ্ন, দ্রুত চাকরি দেওয়ার নাম করে আইন মানা হবে না কেন? তাহলে আর আইন রইল কেন? বিকাশ রঞ্জন মনে করিয়ে দেন, ঠিক একই পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রাথমিকের ক্ষেত্রে নিয়োগ হয়েছিল, পরে তাঁদের বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে চাকরি চলে গিয়েছে। এবার এই নিয়োগের নামে আরও কয়েকজন প্রার্থীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আইনি পথে নিয়োগ হোক। সরকার সরাসরি বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাক, যাতে সবাই অংশ নিতে পারে।’
শাসক দল তাঁর বিরুদ্ধে কিছু মানুষকে প্ররোচণা দিচ্ছে বলেও দাবি করেছেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর জন্য চাকরি হচ্ছে না, এই দাবি নস্যাৎ করে তিনি বলেন, ‘আমি মামলা করি না। সওয়াল করি। আমার সওয়াল আদালত গ্রহণ করতে পারে, নাও করতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই মামলায় আমি আছি। তাই আমার বিরুদ্ধে প্ররোচণা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, সুপার নিউমারিক পোস্টের ক্ষেত্রে কেউ কেউ ভেবেছিলেন বেআইনি পথে দ্রুত চাকরি পেয়ে যাবেন। যদি মামলা নাও হত, নিয়োগ হলেও পরে সেই চাকরি টিকিয়ে রাখা যাবে না বলে দাবি করেন তিনি। আইনজীবী বিকাশের জন্য তাঁর দল সিপিএমকে কোনও বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না তো? এই প্রশ্নে বিকাশ রঞ্জন বলেন, ‘এতে সিপিএমের শক্তি আরও বৃদ্ধি হবে।’