কলকাতা : ফের একবার চর্চার পাহাড়ের রাজনীতি। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে গিয়ে জিটিএ নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন। আবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন সেই নির্বাচন খারিজ করার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। আর এরই মধ্যে আজ মোর্চার দুই নেতার সঙ্গে বৈঠক করলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং এবং সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি আজ দেখা করেন অভিষেকের সঙ্গে। বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও৷ পাহাড় সমস্যার প্রস্তাবিত রাজনৈতিক সমাধানে তরাই এবং ডুয়ার্সের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে আজ আলোচনা হয় দুই পক্ষের মধ্যে।
বৈঠকে মোর্চার নেতারা জানিয়েছেন, জিটিএ নির্বাচন এবং পাহাড়ের সমস্যার প্রস্তাবিত রাজনৈতিক সমাধান একে অন্যের সঙ্গে ভীষণভাবে সম্পর্কিত। এই পরিস্থিতিতে জিটিএ নির্বাচন করা হলে, তা সাধারণভাবে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। তাই, এই অঞ্চলে নির্বাচন একটি নতুন প্রশাসনের জন্য অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত এবং তাও শুধুমাত্র প্রস্তাবিত রাজনৈতিক সমাধানের পরে। তবে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রতিনিধি দল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন করানোর জন্য অনুরোধ করেছেন।
উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসেই কার্শিয়াঙে প্রশাসনিক বৈঠকের সভামঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, “নতুন ভোটার লিস্ট এলেই আমরা জিটিএ নিয়ে এগোব। আমরা পাহাড়ের উন্নয়ন চাই। নির্বাচন হওয়া জরুরি। নিজেদের মধ্যে কোনও বিরোধ নয়। ঝগড়া নয়। একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে উন্নয়নের কাজ করব। জিটিএ নির্বাচন হবে। ওটার সঙ্গে লেগে থাকতে হবে।” এখানেই না থেমে তৃণমূল নেত্রী আরও যোগ করেন, “সবসময় কাজে থাকতে পারবে এমন কাউকে জিটিএ-র দায়িত্ব দেওয়া ভাল।”
শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী সেদিন আরও জানিয়েছিলেন, পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। তবে আইন সংশোধন করেই পাহাড়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে এমনটাই জানান তৃণমূল সুুপ্রিমো। কীভাবে তা নিয়ে কাজ করা যায়, সেপ্রসঙ্গে অনীত থাপা রোশন গিরিদের সঙ্গে আলোচনার কথাও বলেন মমতা।
এদিকে সম্প্রতি লোকসভায় রাজু বিস্তা বলেছেন, “দার্জিলিঙে অনেক দিন ধরে পৃথক রাজ্যের দাবি উঠে আসছে। তার মাঝে দুই বার আধা স্বতন্ত্র সংস্থা দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। ১৯৮৮ সালে একবার দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল গঠিত হয়েছিল। তারপর ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং দার্জিলিঙের স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে তৈরি হয় গোর্খা টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ। ২০১৭ সালে জিটিএর অস্তিত্ব শেষ হয়ে গিয়েছে।”
লোকসভায় বিজেপি সাংসদ কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেন, জিটিএর নির্বাচন কখনোই হওয়া উচিত নয়। জিটিএ-র মধ্যে কেন্দ্রও রয়েছে। তাই কেন্দ্র যেন এই জিটিএ নির্বাচনকে খারিজ করে দেয়। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে, যাতে গোর্খা জাতির উন্নয়ন হবে।