কলকাতা: সাগরদিঘির উপনির্বাচনে হারের পর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উসকে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের তত্ত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপিত অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, বিজেপির যে ভোটাররা তৃণমূলকে হারাতে চেয়েছিল, তাঁদের একটি অংশও কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। অধীরবাবুর সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, ‘বিজেপি ভোট ট্রান্সফার করেছে কংগ্রেসকে। দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক। ওরা একে অপরকে ভোট ট্রান্সফার করে, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’ এবার কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচির গ্রেফতারি নিয়েও সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা বলেছেন, তিনি কৌস্তভের প্রতিবাদী লড়াইকে সমর্থন করেন। কৌস্তভকে ভাইয়ের মতো বলে শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে ক’টি যুব কণ্ঠ সোচ্চার হয়েছে তার মধ্যে কৌস্তভ বাগচী অন্যতম।’ আর এমন এক পরিস্থিতিতে তৃণমূল শিবির থেকে ফের সেই আঁতাতের তত্ত্ব উস্কে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘বিজেপির অবস্থান স্পষ্ট। আমরা এক গণতান্ত্রিক দেশে বহুত্ববাদী সমাজ, বহুদলীয় ব্যবস্থা, সংসদীয় রাজনীতির মধ্যে রয়েছে। মানুষ ২০২১ সালে আমাদের বিরোধী দল হিসেবে বেছে নিয়েছে। বিরোধী দলের দায়িত্ব থাকে রাজ্যে বিরোধীদের অবস্থানকে তুলে রাখা। বিরোধিতা যদি কোনও জায়গায় বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়, যদি মানুষের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর রক্তাক্ত হয়, সেখানে প্রতিবাদ করা বিরোধী দলের কাজ।’ বিজেপি মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘যেভাবে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে রাতের বেলা তাঁকে তুলে আনা হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। নওশাদের গ্রেফতারির সময়েও আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। গণতান্ত্রিক পরিসরে এই ধরনের আচরণ, শাসকের স্বৈরতান্ত্রিক ও অসহিষ্ঞু মনোভাবকেই প্রকট করে।’
কংগ্রেস নেতা ঋজু ঘোষাল অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্যকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘মেঘালয়ে, ত্রিপুরায়, গোয়ায় বিজেপির দোসর হয়ে কারা গিয়েছিল, তা গোটা ভারত জানে। শিলংয়ে গিয়ে রাহুল গান্ধীও বিজেমূল তত্ত্ব সামনে নিয়ে এসেছেন, যা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি। শুভেন্দু অধিকারী কী বলেছেন, তা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। শুভেন্দু অধিকারীর কথা শুনে কংগ্রেসের ধেই ধেই করে নাচার কোনও কারণ নেই। হঠাৎ শুভেন্দু অধিকারী সমর্থন করছেন বলে কংগ্রেসের উদ্বাহু হয়ে নৃত্য করার কোনও কারণ নেই। কংগ্রেস নিজের মতো করে লড়ছে। শুভেন্দু অধিকারী নিজের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা করছেন। তৃণমূল ও বিজেপির আন্ডারস্ট্যান্ডিং দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।’