কলকাতা: রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে বিজেপির কর্মী – সমর্থকরা আসতে শুরু করেছেন শহরে। আস্ত ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে। বঙ্গ রাজনীতি এমন দৃশ্য আগে কোনওদিন দেখা যায়নি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট সাতটি স্পেশাল ট্রেন চেপে আসছেন বিজেপির কর্মীরা। এছাড়া কলকাতার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির কর্মী-সমর্থকদের ভিড় তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার কলকাতার রাজপথ কাতারে কাতারে ভিড় দেখার অপেক্ষায়। জমায়েতে পুলিশি ‘অনুমতি’ মেলেনি, কিন্তু তাতেও কুছ পরোয়া নেই পদ্ম নেতাদের। নীল বাড়ি কাঁপিয়ে কলকাতার রাস্তা গেরুয়া পতাকায় ঢেকে দেওয়ার আশার বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদারদের শরীরী ভাষায় বেশ ইতিবাচক। কিন্তু নবান্ন আজ ‘মমতা-হীন’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই বেরিয়ে পড়েছেন জেলা সফরে। সোমবার বিকেলেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন খড়গপুরে।
নবান্ন অভিযানের জন্য নীল নকশা অনেকদিন আগে থেকেই তৈরি করছিলেন বিজেপি নেতারা। কর্মসূচির ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল অনেকদিন আগে থেকেই। প্রথমে ৭ সেপ্টেম্বর স্থির হয়েছিল নবান্ন অভিযানের দিন। কিন্তু পরে তা পিছিয়ে করা হয় ১৩ সেপ্টেম্বর। এতদিন ধরে জেলায় জেলায় ঘুরেছেন সুকান্ত-দিলীপ-শুভেন্দুরা। প্রচার করেছেন। দলীয় কর্মীদের ভোকাল টনিক দিয়েছেন। সেই ভোকাল টনিক আজ রাজপথে প্রতিফলনের অপেক্ষায়। আজ দুপুর একটা থেকে শুরু হবে মিছিল। মোট তিন জায়গায় হবে জমায়েত। কলেজ স্ট্রিট, হাওড়া ময়দান ও সাঁতরাগাছি।
সাম্প্রতিককালে একের পর এক ইস্যুতে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্যের শাসক শিবির। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, বালি পাচার, কয়লা পাচারের অভিযোগ থেকে গরু পাচারের অভিযোগ। একের পর এক বেনিয়ম ও কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। আর রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এই পরিস্থিতিতে শাসক দলের উপর আরও চাপ তৈরির জন্য প্রস্তুত। তাওয়া গরম থাকতে থাকতেই তাই শাসক দলের অস্বস্তি আরও বাড়াতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদাররা। এখন দেখার, ‘মমতাহীন’ নবান্নে বিজেপির এই অভিযান কতটা স্নায়ুর চাপ তৈরি করতে পারে শাসক দলের উপর।
যে কোনও উপায়ে যে নবান্ন অভিযান সফল করতে চাইছে বিজেপি, তা বুঝতে আর সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সম্ভবত সেই কারণেই বামেদেরও ‘আমন্ত্রণ’ করতে দেখা গিয়েছে বিজেপির নবান্ন অভিযানে।