কলকাতা: অভিমানের সুর এবার আরও চড়া দিলীপ ঘোষের। রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত তাঁর গলায়। টিভিনাইন বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে দিলীপ ঘোষ বলেন, “দল ছাড়লে তো রাজনীতিই ছাড়ব। দেখে নিই পার্টির যদি প্রয়োজন থাকে, পার্টি কী ভাবছে। না হলে সময় নষ্ট করে লাভ কী আছে? যাদের হাতে পাওয়ার আছে তারা টিকে থাকবে। আমরা কী করব পার্টিতে যদি কাজ না থাকে?”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি থেকেছেন এক সময়। এ রাজ্য থেকে সাংসদ ছিলেন তিনি, ছিলেন বিধায়কও। যে সময় বিজেপির এ রাজ্যে সংগঠন বলতে কিছুই ছিল না, সে সময় দিলীপের হাত ধরে বাংলায় একটু একটু করে তৈরি হয়েছে সংগঠন। তবে একুশের পর থেকে ছবিতে বদল আসতে শুরু করে। ক্ষমতা বাড়ে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের। লাইমলাইটে উঠে আসে নতুন মুখ। ক্রমেই কোণঠাসা হতে থাকেন দিলীপ।
‘ঠোঁটকাটা’ হিসাবে দিলীপ ঘোষের নাম রয়েছে। অনেকে বলেন, এটাই তাঁর ইউএসপি। কিন্তু দলের অন্দরে তাঁর এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে বিড়ম্বনা বেড়েছে বই কমেনি। দলেরই একাংশ মনে করেন, মুখের উপর দিলীপ ঘোষের কথা বলে দেওয়ায় বঙ্গ নেতাদের কাউকে কাউকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। এ নিয়ে নালিশও হয়েছে।
তবে রাজ্য সভাপতির পদ হারানোর পর সর্বভারতীয় সহ সভাপতি করা হয় দিলীপ ঘোষকে। যদিও খুব বেশিদিন সে পদে টেকেননি দিলীপ ঘোষ। লোকসভা ভোটের আগেই সংগঠনের সমস্ত পদ হারান তিনি। আর ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে হেরে সেই দিলীপ একেবারেই কোণে চলে গিয়েছেন।
মাঝে দিল্লি থেকে ফিরে বেশ সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে কোনও অজানা কারণে ফের নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন দিলীপ। এবার কি তবে বিজেপিকে ‘বাই বাই’ বলে আরও সঙ্ঘ প্রচারক হিসাবেই কাজ করবেন দিলীপ ঘোষ?
দিলীপ ঘোষের জবাব, “সমাজে অনেক রকম কাজ করেছি। সেটাই করব।” তবে কি এবার ফুলবদল হবে দিলীপের? তাঁর কথায়, “না না। রাজনীতি আমার পেশা নয়। আমি এসেছিলাম একটা মিশন নিয়ে। করে দিয়েছি, আমার কাজ প্রায় শেষ। পার্টির প্রয়োজন থাকলে আমি কাজ করব। না হলে ফালতু ঝগড়া মগড়ার মধ্যে আর কী করব? দেখেনি পার্টি কী ভাবছে দু’ এক মাস। কী করব? আমি রাজনীতিতে পড়ে থাকতে আসিনি। কিছু করতে এসেছিলাম। এই ঝগড়াঝাটি অশান্তির মধ্যে থেকে না হলে কী লাভ।”
পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলেরই কাউকে অসম্মান করা উচিত নয়। এটা আমার দলের ব্যাপার নয়। তবে যে কোনও সিনিয়র পলিটিশিয়ান দলে অসম্মানিত হচ্ছেন দেখলে খারাপ লাগে।”