কলকাতা: মহালয়া থেকে পুজো শুরুর চল তো এখন ট্রেন্ডিং। বিগত কয়েক বছর ধরেই বাংলায় দেখা যাচ্ছে এই ছবি। পুজোর আমেজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাচ্ছে মহালয়ার সময় থেকেই। রাস্তায় নামছে মানুষের ঢল। কিন্তু, এবারে ছবিটা আরও একটু আলাদা হতে চলেছে। ক্যালেন্ডারে ২০ অক্টোবর থেকে পুজো শুরু হলেও ১১ তারিখেই উদ্বোধন হতে চলেছে শহরের একাধিক নামজাদা পুজোর। শহরে আসছে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ইউনেস্কোর টিম। সঙ্গে থাকবে প্রচুর বিদেশি পর্যটক। সে কারণেই এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। তালিকায় যেমন রয়েছে ফিরহাদ হাকিমের চেতলা অগ্রণী তেমনই রয়েছে অরূপ বিশ্বাসের সুরুচি সংঘ, অতীন ঘোষের হাতিবাগান সর্বজনীন। কিন্তু, বাদ পড়েছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, কুমারটুলি সর্বজনীনের মতো বিখ্যাত পুজোগুলি। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক।
কিন্তু দেবীপক্ষ পড়ার আগে কীভাবে পুজোর উদ্বোধন হতে পারে সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার তথা লেবুতলা পার্কের অন্যতম প্রধান পুজো উদ্যোক্তা তথা বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। পাল্টা তোপ দেগে বলেছেন, “আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনও প্রস্তাব আসেনি। এলেও আমরা তা প্রত্যাখ্যান করতাম। মাকে পুতুল হিসাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারব না। আর তাছাড়া পিতৃপক্ষে মাতৃ আরাধনাটাও করা সম্ভব নয়। কোন পাপিষ্ঠরা এসব কাজ করছে কে জানে! আসলে প্রতিটা জিনিসের একটা আচার রয়েছে। দুর্গাপুজোতে মাতৃপক্ষের শুরুতে মাকে আবাহন করা হয় তারপর তাঁকে বিসর্জন করা হয়। এটা তো আমার ইচ্ছায় হয় না। গ্রহ-নক্ষত্র দেখে সবটা ঠিক হয়। এটা হিন্দু-মুসলমান সবার ক্ষেত্রে হয়।”
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “ধরুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না বলে বললেন জিঙ্গেল বেলটা ২৫ ডিসেম্বরের বদলে ২০ তারিখ রাতে বাজানো হবে। কেউ কী বাজাবে? ইদের চাঁদ দেখা যাওয়ার আগে রেড রোডে কেউ নামাজ পড়বে? ইউনেস্কো আসুক আর ইউনিভার্স আসুক কিছুতেই দিন বদল করা যায় না।”
একই সুর কুমারটুলি সর্বজনীনের অন্যতম প্রধান পুজো উদ্য়োক্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যেরও। রীতিমতো আক্রমণের সুরেই তিনি বলেন, “আমরা এটা করতে পারব না। কারণ আমরা রীতি মেনে কাজ করি। আমাদের কাঠামো পুজো হয় রথের দিন। মহালয়ায় দেবীপক্ষ পড়ার পর চক্ষুদান হয়। দেবীপক্ষ না পড়া অবধি আমরা মণ্ডপে কাউকে প্রবেশ করতে দেব না। গতবারেও এসব বলা হয়েছিল। আমরা এটাকে সরাসরি এটা নাকচ করে দিয়েছিলাম। কারণ দেবীপক্ষ না পড়লে এটা হতে পারে না। কেউ যদি বলে বিশ্বকর্মা পুজোর আগে দুর্গাপুজো হবে, এটা হতে পারে। কারণ যেটা যখন সেটা তখনই হবে। যদি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীও বলেন আমি মহালয়ার আগে উদ্বোধন করব। সেটা হবে না।”