কলকাতা: বিধানসভায় বুধবার রাজ্য বাজেট পেশ করেছেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সেই বাজেট নিয়ে কড়া সমালোচনায় বিদ্ধ করলেন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ি। খোঁচা দিলেন ‘এগিয়ে বাংলা’ নিয়েও। বললেন, ‘আমি খুশি হতাম যদি এগিয়ে যেত বাংলা। এগিয়ে বাংলা দেখতে পেলাম না।’ তাঁর কথায়, দেশের অন্যান্য রাজ্যের থেকে বাংলা এখন অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ১৭টি রাজ্যের থেকে বাংলা পিছিয়ে রয়েছে বলে বিধানসভায় দাবি করলেন বিজেপি বিধায়ক তথা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বললেন, ‘যখন মা মাটি মানুষের সরকার এল, তখন ১৫টি রাজ্যের পিছনে ছিল বাংলা। এখন পিছিয়ে ১৭টি রাজ্যের থেকে।’
গতকাল বাজেট প্রস্তাব পাঠের সময় চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে চিরকুট চলে আসা নিয়েও বাঁকা মন্তব্য করলেন অশোকবাবু। বললেন, ‘আমি ৬০-৭০টি দেশে গিয়েছি। কিন্তু ট্রেড মিলে বাজেট হয় দেখিনি। ক্যাবিনেট ছাড়া চিরকুট বাজেট হয়ে গেল। চিরকুটে সিদ্ধান্ত হয়। এখানে একজন সিদ্ধান্ত নেন।’ রাজ্য বাজেটকে ‘খেলা-মেলার বাজেট’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। বাজেটের একাধিক দিক তুলে ধরে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। এই বাজেটে মূলধনী বিনিয়োগের কোনও দিশা নেই বলেই মনে করছেন তিনি। বললেন, ‘আমি রাজ্যকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে চাই না। এটা ভোটকে সামনে রেখে বাজেট। মাথা পিছুর আয়ের নিরিখে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আমাদের রাজ্য অনেক পিছিয়ে রয়েছে।’
তাঁর কথায়, দারিদ্রের থেকে মুক্তির কথা বলতে হবে। কিন্তু, মেলা-খেলা নিয়ে সেটা হবে না বলেই মত তাঁর। বললেন, ‘মূলধনী বিনিয়োগের দিকে নজর রাখতে হবে। এই বাজেটে তা নেই।’ তোপ দাগলেন রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়েও। অর্থনীতিবিদ বিধায়কের কথায়, ‘সরকারের অবহেলায় সরকারি স্কুলের শিক্ষা তলানিতে। শিক্ষার মানের জন্য তৃণমূল কী করবে, বাজেটে তা দেখলাম না। স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে দুর্নীতিকে সামনে রেখে। বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু, সরকারি স্কুলে লেখা-পড়া চলছে না। আমরা এগোইনি। এই যদি এগিয়ে বাংলার অবস্থা হয়, আমার কিছু বলার নেই।’
বিধানসভায় অশোক লাহিড়ির বক্তব্য উঠে এল রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর প্রসঙ্গও। পরিসংখ্যান তুলে ধরে বললেন, রাজ্যে ১৩৫০ জন মানুষের জন্য ডাক্তার মাত্র একজন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উদাসীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে বলেও মনে করছেন তিনি। বললেন, ‘ডাক্তারের অভাব রয়েছে। কিন্তু মেডিকেল কলেজ নেই। পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবার খরচ অনেক বেশি। তৃণমূল সরকার জোর গলায় স্বাস্থ্য সাথীর কথা বলে। কিন্তু তা কাজ করছে না। যে বিল সরকার নির্ধারিত করেছে, তা বেসরকারি হাসপাতাল অবাস্তব বলছে। স্বাস্থ্য সাথী কাজ করলে হত না। এই সরকার শুধুই ঘোষণার সরকার।’