কলকাতা : এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে চলতি সপ্তাহেই প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আগামী সপ্তাহে ফের তাঁকে তলব করা হয়েছে। আর এই নিয়েই কার্যত তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। কড়া ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীরা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় চোর। চুরি করার সময় তো রক্ষাকবচ দরকার হয়নি। স্কুলে ফার্স্ট বেঞ্চ, সেকেন্ড বেঞ্চ শুনেছি। এখানে পূর্বের শিক্ষামন্ত্রী ডিভিশন বেঞ্চ শেখাচ্ছেন। ওনার কুকুরের নামেও কোটি টাকার ফ্ল্যাট। পার্থ বা অনুব্রত বা পরেশ, এদের সবার তার কালীঘাটের সঙ্গে জড়িত হতেই পারে।”
তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে হুগলির বিজেপি সাংসদ খোঁচা দিয়ে বলেন, “এত বড় বড় রাঘব বোয়ালরা ধরা পড়ছে। লজ্জার বিষয়, এরা বড় বড় করে সাংবাদিক বৈঠক করত। বড় বড় কথা বলত। বিজেপিকে নিয়ে নানারকম কথা বলত। আজ নিজেরাই এত বড় একটি স্ক্যাম – এসএসসি দুর্নীতি… মানুষ দেখুক, মানুষ এর বিচার করবেন।”
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইন্টারভিউ বা পার্সোনালিটি টেস্ট না দিয়েই শিক্ষক পদে বহাল তবিয়তে কাজ করে যাওয়ার অভিযোগ ছিল মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের বিরুদ্ধ। কলকাতা হাইকোর্ট কড়া নির্দেশ দিয়ে রেখেছে, পরেশ বাবুর মেয়ে স্কুলে ঢুকতে পারবেন না। ২০২০ সাল থেকে তাঁর বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এদিকে এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে আরও বেশ কিছু তথ্যের জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আবারও তলব করেছে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এসএসসির তৎকালীন উপদেষ্টা কমিটির পাঁচ সদস্যকেও।
পার্থ বাবুর বিরুদ্ধে যাতে কোনও কঠোর পদক্ষেপ না নেন সিবিআই গোয়েন্দারা, তার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। ফলে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আপাতত কোনও রক্ষাকবচ থাকছে না এবং সিবিআই গোয়েন্দারা চাইলে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতেই পারেন।