কলকাতা : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। তৃণমূলকে পরাজিত করতে না পারলেও বিধানসভায় আসন সংখ্যা অনেকটাই বাড়িয়ে নেয় গেরুয়া শিবির। তারপর বেশ কয়েক মাস কেটে গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিজেপির সংগঠন কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। আর তার জেরেই পুরভোটে ভোট শতাংশ কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই এবার বঙ্গ বিজেপির শীর্ষস্তরে বেশ কিছু বদল আসতে পারে। বৃহস্পতিবার সেই সংক্রান্ত বৈঠক বসছে দিল্লিতে।
আজ, বুধবার দিল্লি যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার হবে বৈঠক। বিএল সন্তোষের সঙ্গে সেই বৈঠকে থাকবেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। জানা গিয়েছে, আলোচনায় স্থির হবে, কারা জায়গা পাবে নতুন রাজ্য কমিটিতে।
বিজেপ সূত্রে খবর, আগে দল বদল করে আসা সদস্যদের যে ভাবে কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে, এবার আর তা হবে না। যত বড় নেতাই হোক না কেন, কাউকেই রাখা হবে না। বিধানসভা নির্বাচনের পর এই শিক্ষা নিয়েছে বিজেপি। মুকুল রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো নেতাদের শিবির ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা সম্ভবত ভাবিয়েছে বঙ্গ বিজেপিকে। যারা দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত, তাদেরকেই রাখা হবে কমিটিতে। প্রয়োজনে জেলা স্তর থেকে নতুন মুখ নিয়ে আসা হতে পারে। পাশাপাশি মহিলাদেরও কমিটিতে জায়গায় দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। অন্তত ৭-৮ জন মহিলা থাকতে পারে বলে সূত্রের খবর।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজ্য বিজেপির সভাপতি হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। এরপর তিন মাস পার হয়েছে, এখনও রাজ্য কমিটিতে কারা থাকছেন তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। এ ভাবেই কলকাতার পুরভোট কেটে গিয়েছে। তবে বাকি পুরসভাগুলির ভোটের আগে রাজ্য কমিটি না থাকলে সংঘবদ্ধভাবে এগোনো যে যথেষ্ট কঠিন হবে তা মানছেন বিজেপির একাংশ। তাই এই বৈঠক। দিল্লিতে বিএল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলা বিজেপিতে এই মুহূর্তে মুখ বলতে মূলত দু’জন। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখনও অবধি তাঁদের বিরুদ্ধে দলের অন্দরে বিশেষ ক্ষোভ নেই। শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে দু’ এক জায়গায় বিরোধিতা থাকলেও, সুকান্ত মজুমদার এখনও সকলের কাছেই সমান গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছেন।
ভোটের আগে অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন। ভোট মিটতেই দেখা গিয়েছে অনেকের ‘ঘর ওয়াপসি’ হয়েছে। এর মধ্যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়ের মতো নেতারাও রয়েছেন। সে সব কথা মাথায় রেখেই এবার কমিটি তৈরির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবে বিজেপি। সবদিক রেখে নতুন কমিটি হবে বিজেপির। নিঃসন্দেহে এবারের কমিটি বিজেপির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন : Brucellosis in West Bengal: রাজ্যে বাড়ছে বিরল রোগ ব্রুসেলোসিস, দেড় মাসে আক্রান্ত ৪৫ জন