কলকাতা: ভুয়ো স্লিপ আর ভুয়ো ডোনার কার্ড দিয়ে সংগ্রহ করা হত রক্ত। তারপর সেই রক্ত রেখে দেওয়া হত সাধারণ ফ্রিজে। সাধারণ মানুষের রক্তের প্রয়োজন পড়লে এক বা দেড় হাজার টাকায় সেই রক্ত বিক্রি করা হত। এমনই অভিযোগ সামনে আসে সম্প্রতি। তার ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ভাবে দিনের পর দিন একটি চক্র চালানো হত বলে জানা গিয়েছে। মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত ও প্লাজমা তুলে নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এই চক্রে আর কে কে যুক্ত আছে, তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার অনুপম ভট্টাচার্য নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, রক্ত লাগবে এমন ভুয়ো রিকুইজিশন তৈরি করা হত, ভুয়ো ডোনার কার্ডও তৈরি করা হত। সেগুলি দিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেক তোলা হত রক্ত। এরপর সাধারণ ফ্রিজে রাখা হত সেই রক্ত। যাঁরা প্রয়োজনে রক্ত পেতেন না, ব্লাড ব্যাঙ্কের দরজায় দরজায় ঘরেও সুরাহা হত না, তাঁদের রক্ত বিক্রি করতেন এই অনুপম বা তাঁর লোকজন।
সম্প্রতি এমন অনেক রোগীর পরিবারকে এ ভাবে রক্ত কিনতে হয়েছে। বেশ কয়েকজন এই অভিযোগ জানান মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর স্বপন সোরেনকে। এরপর স্বপন সোরেন মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্র জানা যাচ্ছে , সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বিনা পয়সায় রক্ত আর প্লাজমা তুলে ব্যবসা করা হত। রক্ত ১৫০০ টাকায় আর আরও চড়া দামে প্লাজমা বিক্রি করতেন অনুপমরা। যেখানে -৫১ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এগুলি রাখার কথা, সেখানে বাড়ির ফ্রিজে এগুলি দিনের পর দিন রেখে বিক্রি করতে অনুপম। এর ফলে রক্তের গুনগত মান কেমন থাকত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিভিন্ন অস্ত্রোপচারে বা চিকিৎসায় রক্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনের সময় রক্ত না পেলে আটকে যেতে পারে চিকিৎসা। আর সেই সময় রোগীর পরিবারের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এই ব্যবসা চালানো হত।