কলকাতা : খাস কলকাতায় জোড়া ‘আত্মহত্যা’। মৃত ঋষিকেশ পাল (২৮) এবং রিয়া সরকার (৩০) লিভ-ইন পার্টনার ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। গড়িয়ার বহরমপুর মোড়ের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তাঁরা। মঙ্গলবার ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন ঋষিকেশ ও রিয়া। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ফ্ল্যাট খুলে ভিতরে প্রবেশ করে পুলিশ। দেখা যায়, বিছানায় পড়ে রয়েছে দুই জনের দেহ। পাশেই ওষুধের একটি ফাঁকা স্ট্রিপ পড়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে। ফ্ল্যাট থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, তাঁদের একটা মেডিসিন ডিস্ট্রিবিউশন এজেন্সি ছিল। একটি দুর্ঘটনার জন্য এজেন্সি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চরম অর্থকষ্টে ভুগছিলেন। সেই কারণেই ‘আত্মহত্যা’।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ঋষিকেশ পালের বাড়ি আরামবাগে। রিয়া সরকারের বাড়ি কেষ্টপুরে। ঋষিকেশের একটি ছোট ব্যবসা ছিল। রিয়া একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। কয়েক বছর আগেই এক মর্মান্তিক পরিণতি হয়। একটি দুর্ঘটনা হয় ঋষিকেশের। তারপর একাধিক অপারেশন হয় তাঁর। এদিকে কিছুদিন আগে ক্যান্সারও ধরা পড়ে ঋষিকেশের। মঙ্গলবার তাঁদের আত্মহত্যার খবর পেয়ে বাঁশদ্রোণী থানার ডিউটি অফিসার এসআই এ কে চৌরাসিয়া এবং অন্যান্য পুলিশকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তখন ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। স্থানীয়দের সাহায্যে এবং ফ্ল্যাট মালিকের ভাইয়ের থেকে ডুল্পিকেট চাবি দিয়ে ভিতরে ঢোকে পুলিশ।
ভিতরে ঢুকে পুলিশ দেখে, বিছানার মধ্যে পড়ে রয়েছে ঋষিকেশ এবং রিয়ার নিথর দেহ। ঘরের ভিতর থেকে কিছু ওষুধে স্ট্রিপও পাওয়া গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। তাতে লেখা ছিল, চরম আর্থিক সঙ্কটের কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা। এরপর তড়িঘড়ি তাঁদের টালিগঞ্জের এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। যদিও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য তাঁদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত ঘটনায় কোনও পক্ষ থেকে অভিযোগ জমা পড়েনি।