কলকাতা: চলে গেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সকাল থেকেই বাংলার রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া। দল-মত নির্বিশেষে পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটের সামনে এদিন ভিড় বেড়েছে সকাল থেকে। দলের নেতাদের পাশাপাশি, গিয়েছেন বিরোধীদ দলের বহু নেতা। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও বুদ্ধবাবু কতটা সৌজন্য বজায় রেখে রাজনীতি করতেন, সে কথা বলছেন কংগ্রেস, তৃণমূলের নেতারা। এদিন বুদ্ধবাবুর সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন।
বরাবরই শাসক দল তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিতি চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন। সিপিএমের বিরোধিতায় বারবার সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিশেষত নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় সিপিএমের বিরোধিতায় যে বুদ্ধিজীবীরা পথে নেমেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভাপ্রসন্ন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আক্রমণ করতে গিয়ে একাধিকবার কর্কশ শব্দ প্রয়োগ করতেও শোনা গিয়েছিল তাঁকে। বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে ছুটে গেলেন সেই শিল্পী। তিনি জানান মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও বুদ্ধবাবুর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক ছিল তাঁর। তাঁর থেকে বছর তিনেকের বড় ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
শুভাপ্রসন্ন এদিন বলেন, “ওঁর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক ছিল। আমাকে উনি ভালবাসতেন। অনেক বিষয়ে আমরা কথা বলতাম। মতের দূরত্ব থাকলেও বিশেষ সম্পর্ক ছিল তাঁর সঙ্গে।” কথা বলতে গিয়ে চোখে জল এসে যায় তাঁর। কেঁদে ফেলেন শুভাপ্রসন্ন। বলেন, ‘এমন সৎ মানুষ দেখা যায় না। এই সততার কোনও তুলনা নেই।’
উল্লেখ্য, বছর খানেক আগে তৃণমূলের সঙ্গে শুভাপ্রসন্নর বিরোধ সামনে এসেছিল। ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যে বিরোধের সূত্রপাত হয়। সেই বিরোধের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে না থাকলেও শুভাপ্রসন্নকে নিশানা করতে শুরু করেছিলেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। এমনকী শুভাপ্রসন্ন যে বুদ্ধবাবুর অনুরাগী, এ কথাও বলেছিলেন তৃণমূলের কোনও কোনও নেতা। আর আজ সেই বুদ্ধবাবুকে শেষবার দেখতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন চিত্রশিল্পী।