কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ঘিরে নয়া বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছে বুদ্ধদেব সাউকে। সমাবর্তনের আগেই তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়েছেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোস। এমন অবস্থায়, পড়ুয়াদের ডিগ্রির শংসাপত্রে বুদ্ধদেব সাউয়ের সই গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজভবন। এদিকে সেদিনের সমাবর্তনে হাজার হাজার পড়ুয়া তাঁদের শংসাপত্র গ্রহণ করেছেন। নয়া এই বিতর্কের মধ্যে ধোঁয়াশার মধ্যে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই পড়ুয়ারাও। এসবের মধ্যেই সদ্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া বুদ্ধদেববাবুর গলাতেও অভিমানের সুর। বলছেন, ‘আমি কিছু অন্যায় করেছি কি না, তা শিক্ষিত সমাজ বলবে। আমিও দেখতে চাই, আমি কোন পৃথিবীতে আছি।’
সদ্য ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে অপসারিত যাদবপুরের গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউয়ের সাফ কথা, মানবতার দিক থেকে যেটা সঠিক, তিনি সেই সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। সঙ্গে এও বললেন, তিনি একা কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট সদস্যরা মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘আমি ধরে নিয়েছি, যেটা মানবতার দিকে, সেটাই সঠিক। তবে আমি একা সিদ্ধান্ত নিইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বডি, কোর্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোর্ট যখন সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সবাই সব জানে। পুলিশ প্রশাসন জানে, রাজভবন জানে, সরকার জানে।’
বুদ্ধদেব সাউয়ের আরও সংযোজন, ‘সরকার সমাবর্তনের জন্য অনুমতি দিয়েছে। সরকার জানিয়েছে, আপনি চালিয়ে যান। তার উপর নির্ভর করেই কোর্ট সিদ্ধান্ত নেয় সমাবর্তন চালিয়ে যাওয়ার এবং সহ-উপাচার্যের হাত ধরে প্রক্রিয়া চালানোর। এখানে কোনও অন্যায় আছে কি না, তা শিক্ষিত সমাজ ভাববে। আমি কিছু অন্যায় করেছি কি না, তা শিক্ষিত সমাজ বলবে। আমিও দেখতে চাই, আমি কোন পৃথিবীতে আছি।’
সদ্য দায়িত্ব থেকে অপসারিত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের বক্তব্য, ‘আইন তৈরি হয়েছে মানুষকে বাঁচানোর জন্য। মানুষকে মেরে ফেলার জন্য আইন তৈরি হয়নি। সাড়ে চার হাজার পড়ুয়ার জীবন যেখানে রক্ষিত হচ্ছে, কোনও আইন দ্বারা সেটা অসুরক্ষিত করে ফেলা কাম্য নয়।’ তাঁর কথায়, পড়ুয়ারা সকলেই জানতেন ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তনের কথা। বর্তমানে প্যানডেমিকের মতো কোনও পরিস্থিতিও নেই। সেক্ষেত্রে তাঁর মতে, পড়ুয়ারা বিভিন্ন জায়গায় বলে রেখেছিলেন, তাঁদের সমাবর্তনের ডিগ্রি ২৪ ডিসেম্বর পাওয়া যাবে। সেই মতো তাঁরা কেউ চাকরির জন্য, কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন জায়গায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছিলেন। সেই কারণেই পড়ুয়াদের কথা বিবেচনা করে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুদ্ধদেব সাউ।